যশোরের মনিরামপুর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের কামরুজ্জামান। চার বছর পর এবার তিনি দুই একর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করতে পেরেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। তিনি বলেন, তার মতো ইউনিয়নের প্রায় ৮শ কৃষক এবার বোরো ধান উৎপাদন করতে পেরেছেন। এর আগে জলাবদ্ধতার কারণে কেউ ফসল আবাদ করতে পারতেন না। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) সেচ প্রকল্পের সুফল পাচ্ছেন কৃষক কামরুজ্জামানের মতো এক সময় যশোরের দুঃখ ভবদহ অঞ্চলের মানুষ। ২০২০ সালের নভেম্বরে বিএডিসি (সেচ বিভাগ) যশোর ৫৭টি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্নসহ মোট ১৭০টি সেচযন্ত্রের মাধ্যমে পানি নিস্কাশন করে বিলকেদারিয়া, বিলকপালিয়া, মানুষ মরার বিল, আড়পাতা বিল, বিলখুকশিয়া এলাকায় চলতি বোরো মৌসুমে প্রায় ৪ হাজার হেক্টর জমিতে ফসল ফলানো সম্ভব হয়েছে।

বিএডিসি (সেচ) যশোরের সহকারী প্রকৌশলী সোহেল রানা বলেন, ভবদহ এলাকায় প্রত্যক্ষভাবে ২৭টি এবং পরোক্ষভাবে আরও ২৬টি বিলের পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে ২৩টি ইউনিয়নের ২১৮টি গ্রাম এবং ৩৩০ বর্গকিলোমিটার এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভয়াবহ দুর্ভোগে রয়েছে এক লাখ ৮৫ হাজার মানুষ। জলাবদ্ধ এলাকায় অধিকাংশ স্থানে কোনো ফসল উৎপাদন হয়নি। মানুষের বাড়িঘরসহ বিভিন্ন শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে প্রায় সারা বছরই পানি জমে থাকে। চাষাবাদ, মৎস্য চাষ কোনোটাই সম্ভব হয়ে ওঠে না। মানুষের অসহায় অবস্থায় জীবন যাপন করতে হচ্ছে।

বিএডিসি (সেচ) যশোরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল রশিদ বলেন, আগামী বছরে আরও বৃহৎ আকারে কার্যক্রম শুরুর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এতে অতিরিক্ত ৭ হাজার হেক্টর জমি চাষের আওতায় আনা সম্ভব হবে। এর মধ্য দিয়ে এলাকার মানুষের জীবনমান উন্নয়নসহ আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছি।

বিলকপালিয়ার কৃষক আফজাল হোসেন বলেন, আমাদের এলাকা সারাবছর পানিতে ডুবে থাকত। কেউ ফসল আবাদ করতে পারত না। বিএডিসির সহযোগিতায় এবার আমরা বোরো ধান উৎপাদন করতে পেরেছি। এতে আমাদের পরিবারে সচ্ছলতা এসেছে।