কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার মানিকখালী রেলস্টেশনের মাস্টারের কোয়ার্টার দখল করে ক্লাবের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে এলাকার প্রভাবশালী একদল যুবক। এ নিয়ে স্থানীয় সচেতন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। প্রভাবশালীদের ভয়ে মাস্টারসহ স্টেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কথা বলতে সাহস পাচ্ছেন না।
স্থানীয় সূত্র ও এলাকাবাসী জানায়, গত শনিবার সকালে স্থানীয় যুবক পলাশ, মাহফুজ, ফেরদৌসের নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জনের একটি দল ঐক্যবদ্ধ হয়ে মানিকখালি স্টেশনসংলগ্ন স্টেশন মাস্টারের কোয়ার্টারটি দখলে নেয়। পরে কোয়ার্টারের ভেতরে থাকা মালপত্র সরিয়ে পরিস্কার করে। ট্রাক্টর দিয়ে বালু এনেও ফেলা হয়েছে সেখানে। এরপর দুপুরের দিকে কোয়ার্টারে 'জাগ্রত যুব সংঘের' সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয় তারা। বিষয়টি নজরে আসার পর স্থানীয়রা সাইনবোর্ড দ্রুত উচ্ছেদের দাবি জানিয়েছেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে।
মানিকখালি রেলস্টেশনের মাস্টার আবদুস সালাম বলেন, শনিবার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রভাবশালী যুবকরা কোয়ার্টারটি দখল করে নেয়। তাদের ভয়ে স্টেশনের কর্মচারীরা কোনো বাধা দেওয়া বা কথা বলতে সাহস করেনি। একপর্যায়ে তারা কোয়ার্টারে জাগ্রত যুবসংঘের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয়।
সালাম আরও বলেন, তিনি আশা করেছিলেন তারা হয়তো তাদের ভুল বুঝতে পেরে কোয়ার্টার ছেড়ে দেবেন। তাই তিনি তাৎক্ষণিকভাবে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাননি। এখন তিনি লিখিতভাবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন।
কোয়ার্টার দখলের বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুল আওয়ালের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি। তবে অভিযুক্ত পলাশ বলেন, 'কোয়ার্টারটি অনেকটা পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল বলে আমরা দখল করে নিয়েছি। প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।'
আরেক অভিযুক্ত ফেরদৌস বলেন, দখলের সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কারণ সরকারি স্থাপনা দখল করা বেআইনি কাজ, তিনি তা জানেন। তার কাছ থেকে দুই গাড়ি বালু চাওয়া হলে তিনি বালু দিয়েছেন। টিআইবির 'স্বচ্ছতার জন্য নাগরিক' (স্বজন)-এর কিশোরগঞ্জের সমন্বয়ক গাজী মুহিবুর রহমান বলেন, যারা সামাজিক সংগঠন করে তারা সমাজের সচেতন অংশ বলে মনে করি। কিন্তু একটি সংগঠনের নামে রেলস্টেশন মাস্টারের কোয়ার্টার যেভাবে দখল করে নেওয়া হয়েছে তা নজিরবিহীন। তার ধারণা, ক্ষমতাসীন ব্যক্তি এবং প্রভাবশালী রাজনৈতিক চক্র এর সঙ্গে জড়িত। এ বিষয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দ্রুত হস্তক্ষেপ করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।