- সারাদেশ
- বিচারের নামে মাদ্রাসাছাত্রকে পিটিয়ে জখম
বিচারের নামে মাদ্রাসাছাত্রকে পিটিয়ে জখম

বিচারের নামে মাদ্রাসাছাত্র রবিউল ইসলামকে পিটিয়ে জখম করেছে শিক্ষকরা
বরগুনার আমতলীতে বিচারের নামে এক মাদ্রাসাছাত্রকে পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি এবং এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের উত্তর তক্তাবুনিয়া গ্রামের ইউসুফিয়া রশিদিয়া হাফিজিয়া নুরানী মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে। এঘটনায় একই দিন রাত ১২ টায় আমতলী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শিশুটির বাবা।
নির্যাতিত ওই ছাত্রের নাম রবিউল ইসলাম (১২)। সে উত্তর তক্তাবুনিয়া গ্রামের দুলাল ফকিরের ছেলে।
জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যা সাতটায় মাদ্রাসার হোস্টেলে রবিউলের সাথে একই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র মো. নাঈমের জুতা পায়ে দেওয়া নিয়ে সামান্য কথা কাটাকাটি হয়। ঘটনাটি নাঈম মাদ্রাসার নূরানী শাখার শিক্ষক মো. মাহবুব আলমকে জানায়। পরে ওই শিক্ষক এবং মাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মো. আবুল চৌকিদার বিষয়টি নিয়ে বিচারের নামে রবিউলকে ডেকে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে বেধরক পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন। কঞ্চির আঘতে রবিউলের পিঠ, সিনা, ঘাড় এবং দুই উরু মারাত্মক জখম হয়। পরে মারধরের খবর পেয়ে রবিউলের বাবা মো. দুলাল ফকির মাদ্রাসা থেকে রাত ১১ টায় ছেলেকে উদ্ধার করে আমতলী হাসপাতালে এনে চিকিৎসা করান। চিকিৎসা শেষে রাত ১২ টায় তিনি বাদী হয়ে অভিযুক্ত সভাপতি আবুল চৌকিদার ও শিক্ষক মাহবুব আলমের বিরুদ্ধে আমতলী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
আহত রবিউল কান্না জড়িত কন্ঠে জানায়, সহপাঠি নাঈমের সাথে জুতা পায়ে দেওয়া নিয়ে তার সামান্য কথা কাটাকাটি হয়। এ নিয়ে মাদ্রাসার সভাপতি আবুল চৌকিদার ও মাহবুব স্যার তাকে বাঁশের ডাল দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। সে আরও জানায়, শিক্ষকদের হাতে পায় ধরেও সে রক্ষা পায়নি।
শিশুটির বাবা মো. দুলাল ফকির বলেন, খবর পেয়ে রাত ১১টার সময় মাদ্রাসায় গেলে ছেলে আমাকে দেখে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে। তখন আমি ওর গায়ে মারধরের অনেক আঘাতের চিহ্ন দেখতে পাই। তিনি আরও বলেন, এমনভাবে আমার ছেলেকে পিটানো হয়েছে যে বাঁশের কঞ্চির আঘাতে ওর পুরো শরীর ফুলে লাল হয়ে গেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
অভিযুক্ত আবুল চৌকিদার ও মাদ্রাসাশিক্ষক মো. মাহবুব আলম মাদ্রাসাছাত্রকে পিটানোর কথা সরাসরি স্বীকার না করলেও জানান, শিশুটিকে সামন্য চর থাপ্পর দেওয়া হয়েছে।
আমতলী হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মিজানুর রহমান জানান, শিশু রবিউলের শরীরের অনেক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিল।
অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা আমতলী থানার এসআই মো. সোহরাব হোসেন জানান, তুচ্ছ ঘটনায় বিচারের নামে শিশু রবিউলকে যেভাবে পিটানো হয়েছে তা অমানবিক।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহ আলম হাওলাদার জানান, মাদ্রাসাছাত্র রবিউলকে মারধরের ঘটনায় তার বাবা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে এ ঘটনায় অপরাধীদের কঠিন শাস্তির আওতায় আনা হবে।
মন্তব্য করুন