কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার ভানী এলাকায় প্রবহমান একটি খাল ভরাট করে আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ চলছে। ওই খাল ভরাটের ফলে বন্যা, জলাবদ্ধতাসহ ফসলি জমির ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় ২০ গ্রামের কৃষকরা। তবে অভিযোগ শুনে ক্ষতির বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক।

সরেজমিন স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেবিদ্বারের ভানী এলাকায় ৪০ জন ভূমিহীনের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প হচ্ছে। এ জন্য প্রকল্পের জমির সঙ্গে পাশের ওই খালটি ভরাট করায় ভানী, আছাদ নগর, খিরাইকান্দি, বখরিকান্দি, আন্দিরপাড়, মধ্যনগর, তেবারিয়াসহ প্রায় ২০ গ্রামের কয়েকশ কৃষক পরিবার দুর্ভোগে পড়বে। দ্রুত ওই খাল উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় ভুক্তভোগীরা। তারা জানান, ওই এলাকার একাধিক স্থানে আরও খাসজমি থাকলেও স্থানীয় চেয়ারম্যান খাল ভরাট করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন। এটি বাস্তবায়ন হলে কৃষি জমিতে পানির সেচ এবং বর্ষার পানি নিস্কাশনসহ পানি চলাচলের রাস্তা বন্ধ হয়ে ফসলি জমি নষ্ট, জলাবদ্ধতা ও বন্যা সৃষ্টি হবে। এ ছাড়া সেখানকার বন্দোবস্তকৃত সম্পত্তির কাগজপত্র বাতিল না করেই ভেকু মেশিন দিয়ে ৮-৯ ফুট গভীর করে প্রকল্পের জন্য মাটি কাটার কাজ করা হচ্ছে।

ওই এলাকার কৃষক আবদুল মজিদ জানান, তার তেমন ব্যক্তিগত ফসলি জমি নেই। অন্যের জমি বর্গা নিয়ে ফসল উৎপাদন করে সংসার চালাচ্ছেন। পানি সেচ এবং বর্ষা শেষে জমি থেকে পানি নিস্কাশনের একমাত্র ভরসা এই ভানী খাল। এটি ভরাট করায় পানির চলাচল বন্ধ হয়ে ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

কামরুল হাসান মামুন নামে আরও এক বাসিন্দা বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পে মাটি ভরাটের জন্য তাদের পুকুরে ড্রেজার মেশিন বসানো হয়েছে মাটি ও বালু উত্তোলন করার জন্য। ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা শুরু করলে পুকুরের চারপাশে থাকা ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ার শঙ্কা তৈরি হবে। এ বিষয়ে তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

খাল ভরাটের বিষয়ে ভানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নুরুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, ভরাটকৃত অংশ সরকারি খাসজমি। খাল আগেই দখল করা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে খালের দখলকৃত অংশ উচ্ছেদ করবে প্রশাসন, যাতে পানি চলাচল বন্ধ হয়ে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত না হন।

এ বিষয়ে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বলেন, গৃহহীন ও ভূমিহীনদের আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়নে যাতে কোনো সাধারণ মানুষ ক্ষতির সম্মুখীন না হন, সেদিকে আমরা খেয়াল রাখছি এবং ভানী এলাকার বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।