- সারাদেশ
- ফতোয়ার শিকার হয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যার অভিযোগ
ফতোয়ার শিকার হয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যার অভিযোগ

প্রতীকী ছবি
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মৃগীডাঙ্গা গ্রামে ফতোয়া দিয়ে ৫১ বেত্রাঘাত করে এক গৃহবধূকে আত্মহত্যায় বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ওই গৃহবধূর বাবা মফিজুল ইসলাম। শুক্রবার সকালে আত্মহত্যার ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানা গেছে।
শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কাথণ্ডা গ্রামের মফিজুল ইসলাম ফতোয়াবাজদের শাস্তির দাবি জানান। তবে পুলিশ বলছে, লাশের সুরতহালের সময় গৃহবধূর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মফিজুল ইসলাম বলেন, ৭-৮ বছর আগে আমার মেয়ে রোকেয়া খাতুনের সঙ্গে মৃগীডাঙ্গা গ্রামের আবু জাফরের ছেলে সাদ্দাম হোসেনের বিয়ে হয়। সম্প্রতি সাদ্দামের ভগ্নিপতি কাথণ্ডা গ্রামের শহীদুল বিশ্বাসের ছেলে ইস্রাফিলের কুনজর পড়ে আমার মেয়ের ওপর। গত ৬ জুন আমার মেয়ে নিখোঁজ হয়। পরে জানতে পারি ইস্রাফিল তার ভগ্নিপতি এরশাদ আলীর সহযোগিতায় আমার মেয়েকে ফাঁদে ফেলে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে গেছে। গত বুধবার এরশাদ আমার মেয়েকে নিয়ে এলেও তার শ্যালক ইস্রাফিলকে সঙ্গে আনেনি। পরে একই এলাকার সাইফুল ইসলাম, এরশাদ ও শহীদুল ইসলামের ইন্ধনে ফতোয়া দেওয়া হয়, রোকেয়া তিন দিন পর বাড়ি ফিরেছে বিধায় তাকে তাওবা পড়তে হবে এবং ৫১ বেত্রাঘাত করে পবিত্র করে তারপর ঘরে তুলতে হবে। তা না হলে আমার মেয়েকে এলাকাছাড়া করবে বলে তার স্বামী এবং শ্বশুরকে হুমকি দেয় তারা। ফতোয়াবাজদের চাপে পড়ে আমার মেয়েকে গত বৃহস্পতিবার রাতে ৫১ বার বেত্রাঘাত করতে এবং তাওবা পড়াতে রাজি হয় তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন। সে অনুযায়ী মাওলানা আবুল খায়ের তাকে তাওবা পড়ান। আর এরশাদ আলী আমার মেয়েকে ৫১টি বেত্রাঘাত করেন।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বেত্রাঘাতের পরে ক্ষোভ ও অপমানে গত শুক্রবার সকালে রোকেয়া আত্মহত্যা করে। ফতোয়া দিয়ে রোকেয়াকে আত্মহত্যায় বাধ্যকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
এ ব্যাপারে মাওলানা আবুল খায়ের ও এরশাদ আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে তাদের পাওয়া যায়নি। তাদের ফোন বন্ধ রয়েছে। বক্তব্য জানতে তাদের মোবাইল ফোনে বার্তা দিয়েও উত্তর মেলেনি।
সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি দেলোয়ার হুসেন জানান, গৃহবধূর বাবা বাদী হয়ে সদর থানায় যে অভিযোগ দিয়েছেন, তাতে ফতোয়া ও ৫১ বেত্রাঘাতের কথা উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু লাশের সুরতহালের সময় তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। আশপাশের কেউ ৫১ বেত্রাঘাত দেওয়ার বিষয়টি বলতেও পারেনি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর এ ব্যাপারে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন