আবারও সবাইকে চমকে দিল টিম কোয়ান্টা রোবটিক্স। এবার তারা তৈরি করেছে এমন রোবট, যা সরাসরি কথার পিঠে কথা বলতে পারে মানুষের সঙ্গে। দিতে পারে মানুষের প্রশ্নের উত্তর। এটির নাম রাখা হয়েছে 'ব্লুবেরি'। এর আগে তারা তৈরি করেছিলেন এমন একটি রোবট, যেটি কিনা কথা বলতে পারে।
'ব্লুবেরি' নির্মাণে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থীর গড়ে তোলা টিম কোয়ান্টা রোবটিক্সের সময় লেগেছে তিন মাস। টাকা ব্যয় হয়েছে প্রায় এক লাখ। দিনরাত পরিশ্রম করে এটি নির্মাণ করেছেন তারা। কিন্তু নতুন তৈরি করা রোবটটি সরাসরি যোগাযোগ করতে পারে, অগ্নিকাণ্ডের সংকেত দিতে পারে- এসব নিশ্চিত হওয়ার পর আনন্দে উদ্বেল হয়ে উঠেছেন তারা।
করোনার সময়ে শিক্ষার্থীদের যেখানে বলতে গেলে অলস সময় কাটাতে হচ্ছে, সেখানে জাতীয় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমির (নেকটার) সহায়তায় এ রোবট নির্মাণ করেছে টিম কোয়ান্টা রোবটিক্স। এ টিম গড়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের দশম ব্যাচের শিক্ষার্থী সনজিত মণ্ডলের নেতৃত্বে। টিমে আরও রয়েছেন আইসিটি বিভাগের শিক্ষার্থী জুয়েল দেবনাথ এবং সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী মিষ্টু পাল। রোবটটি তৈরিতে তারা ব্যবহার করেছেন রাসবেরি পাই মাইক্রো প্রসেসর এবং আর্দুইনো মেগা মাইক্রো কন্ট্রোলার। উদ্ভাবকরা বলছেন, ভবিষ্যতে রোবটটিকে আরও উন্নত করা সম্ভব। আরেকটু উন্নত করলে রোবটটিকে করোনার নমুনা সংগ্রহ করার মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজেও ব্যবহার করা যাবে। প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক হিসেবে, বাচ্চাদের বিনোদন দিতে এবং যে কোনো প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মাধ্যমে নতুন নতুন কিছু শেখানোর কাজেও ব্যবহার করা যাবে ব্লুবেরিকে।
টিম কোয়ান্টা রোবটিক্সের দলনেতা সনজিত মণ্ডলের বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ডিঙ্গামারী গ্রামে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে টিউশনির টাকায় চলতে হতো তাকে। টিউশনির টাকা বাঁচিয়ে এক সময় ছোট রোবট তৈরি করেন। এভাবে শুরু হয় তার স্বপ্ন বোনা। ২০১৯ সালে সঞ্জিত মণ্ডলের নেতৃত্বে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও তিন শিক্ষার্থী মিলে তৈরি করেন দেশের চতুর্থ মানবাকৃতির রোবট সিনা।
টিমের সদস্য জুয়েল দেবনাথ বলেন, এটা করতে গিয়ে দিনরাতের পার্থক্য ভুলেই গিয়েছিলাম। এমনও সময় গেছে, যখন টানা ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা কাজ করেছি।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এমরান কবির চৌধুরী বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। তাদের এখন শুধু সুযোগ করে দেওয়া দরকার।