সাতক্ষীরায় স্বাস্থ্য বিভাগে ১৭ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় সাতক্ষীরার সাবেক সিভিল সার্জন ডা. তৌহিদুর রহমানসহ নয় জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আসাদুজ্জামান দিলু সমকালকে জানান, সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ মফিজুর রহমান গত বুধবার এই আদেশ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার তিনি এ সংক্রান্ত আদেশের কপি পেয়েছেন।

নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন, সিভিল সার্জন অফিসের সাবেক হিসাব রক্ষক আনোয়ার হোসেন, স্টোর কিপার এ.কে.এম ফজলুল হক, ঢাকার সেগুনবাগিচার মেসার্স বেঙ্গল সায়েন্টিফিক এন্ড সার্জিক্যাল কোম্পানির স্বত্ত্বাধিকারী জাহের উদ্দিন সরকার, নয়াপল্টনের মেসার্স মাকেন্টাইল ট্রেড ইন্টার ন্যাশনালের স্বত্ত্বাধিকারী ও অংশীদার আব্দুর ছাত্তার সরকার, একই এলাকার মেসার্স মাকেন্টাইল ট্রেড ইন্টার ন্যাশনালের স্বত্ত্বাধিকারী ও অংশীদার আহসান হাবিব, ইউনিভার্সেল ট্রেড করপোরেশনের স্বত্ত্বাধিকারী আসাদুর রহমান, মেসার্স মাকেন্টাইল ট্রেড ইন্টার ন্যাশনালের ম্যানেজার কাজী আবু বকর সিদ্দীক ও মহাখালী নিমিউ এন্ড টিসির অবসরপ্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলী এ.এইচ.এম আব্দুস কুদ্দুস।

সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আসাদুজ্জামান দিলু সমকালকে জানান, সাতক্ষীরার সাবেক সিভিল সার্জন ডা. তৌহিদুর রহমানসহ নয় জন অসৎ উদ্দেশ্যে পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতির আশ্রয়ে চিকিৎসা সংক্রান্ত মালামাল ক্রয় ও সরবরাহের নামে তিনটি বিলের বিপরীতে মোট ১৬ কোটি ৭১ লাখ ৩২ হাজার ২২২ টাকা সাতক্ষীরা হিসাব রক্ষণ অফিস থেকে তিনটি চেকের মাধ্যমে উত্তোলন করেন। পরে সরকারের আর্থিক ক্ষতি সাধনের উদ্দেশ্যে তা আত্মসাৎ করেন। 

বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় নাগরিক আন্দোলন মঞ্চের নেতারা দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। তারা ২০১৯ সালের ২৪ এপ্রিল সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিস ঘেরাও করেন এবং প্রধানমন্ত্রী ও দুদক চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। 

পরে দুদকের প্রধান কার্যালয় ঢাকার সেগুনবাগিচার তৎকালীন উপ-সহকারী পরিচালক (বর্তমান সহকারী পরিচালক) মো. জালাল উদ্দিন ২০১৯ সালের ৯ জুলাই সিভিল সার্জন ডা. তৌহিদুর রহমানসহ নয় জনের বিরুদ্ধে  দুর্নীতি দমন কমিশন খুলনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন। 

আসামিরা হাইকোর্টের নির্দেশে কয়েক দফায় সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে হাজির হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করার পর জামিনে মুক্তি পান। 

দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর আদালতে এজাহারভুক্ত সব আসামিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের  প্রধান কার্যালয়ের উপ পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম।

আসাদুজ্জামান দিলু আরও জানান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ন্যায়বিচারের স্বার্থে আসামিরা যাতে দেশ ত্যাগ না করতে পারেন সেজন্য গত ৯ জুন সংশ্লিষ্ট আদালতে একটি আবেদন করেন। 

গত ১৬ জুন ভার্চুয়াল আদালতে ওই আবেদনের শুনানি হয়। শুনানি শেষে বিচারক শেখ মফিজুর রহমান তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদন মঞ্জুর করেন।