করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বৃহস্পতিবার থেকে সারাদেশে কঠোর লকডাউন শুরু হচ্ছে। এ কারণে চলছে রাজধানী থেকে বাড়ি ফেরার প্রতিযোগিতা। এর প্রভাবে বুধবার ভোর থেকেই শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে দক্ষিণবঙ্গমুখী মানুষের উপচে পড়া ভিড়। 

চলমান সীমিত পরিসরের লকডাউনে পুলিশের চেকপোস্ট উপেক্ষা করে ঢাকা ও আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে সিএনজিচালিত আটোরিকশা ও ব্যক্তিগত গাড়িযোগে ঘাটে আসছে মানুষ। যারা ভেঙে ভেঙে আসছেন তাদের পথে পথে অধিক ভাড়া গুনতে হচ্ছে। মানুষের চাপে ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে শত শত ব্যক্তিগত ও পণ্যবাহী গাড়ি।

শিমুলিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিটি ফেরিই হাজার হাজার যাত্রীতে বোঝাই। তবে ঢাকাগামী যাত্রীদের তেমন চাপ নেই। ফেরিতে পণ্যবাহী ট্রাক, অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি যানবাহন পার হচ্ছে। শিমুলিয়া প্রান্তে যাত্রীদের চাপ বেশি থাকায় বাংলাবাজার ঘাট থেকে দ্রুততার সঙ্গে ফেরি শিমুলিয়ার উদ্দেশে রওনা হচ্ছে।

বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা গেছে, বুধবার ভোর থেকে ঘরমুখো যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। মঙ্গলবার নৌরুটে যাত্রীর চাপ ছিল তুলনামূলকভাবে কম। এ নৌরুটে ৪টি রো রো, ৫টি ডাম্পসহ ১৪টি ফেরি চলাচল করছে। ফলে যানবাহনের জটলা নেই। ফেরিতে পণ্যবাহী গাড়ির চেয়ে ব্যক্তিগত গাড়ি ও মানুষ বেশি পার হচ্ছে। 

বিআইডব্লিউটিসির বাংলাবাজার ফেরিঘাটের সহ-ব্যবস্থাপক সামসুল আবেদীন বলেন, সকাল থেকে ঘরমুখো মানুষের চাপ অনেক বেশি। ভোর থেকেই রাজধানী থেকে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ বাড়ি ফিরছে। তবে ঢাকাগামী যাত্রীদের চাপ অন্যান্য দিনের চেয়ে কমেছে।

 বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক ফয়সাল আহমেদ জানান, শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে বর্তমানে ১৪টি ফেরি সচল রয়েছে। যাত্রী ও ঘাটে আটকে থাকা পণ্যবাহী পরিবহন পার হচ্ছে। 

এদিকে ঘাট ও ঘাটের প্রবেশমুখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি রয়েছে। বসানো হয়েছে চেকপোস্ট।

লৌহজং থানার ওসি আলমগীর হোসাইন জানান, শিমুলিয়া মোড়ে ও ঘাটের প্রবেশমুখে চেকপোস্ট রয়েছে। এদিকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের শ্রীনগর এলাকায়ও চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল করছে। ঘাটেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছে।

মাওয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সিরাজুল কবির জানান, লকডাউনকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে। তারা যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পদ্মা পার হয় সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। 

বাংলাবাজার ঘাটের ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক মো. জামালউদ্দিন জানান, বাংলাবাজার ঘাটে পুলিশের টহল রয়েছে। কোনো বিশৃঙ্খলা যাতে না হয় সেদিকে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে।

মুন্সীগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন দেব জানান, ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে সড়কে ট্রাফিক ও জেলা পুলিশের একাধিক চেকপোস্ট রয়েছে। প্রয়োজন ছাড়া কোনো যানবাহন ঘাট মুখে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এছাড়া প্রতিটি উপজেলাসহ জেলা সদরেই ৬টি চেকপোস্ট রয়েছে। জরুরি সেবাসমূহের দোকান ছাড়া সকল ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলায় কঠোরভাবে লকডাউন পালনে কার্যকর বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।