- সারাদেশ
- ১৮ পরিবারকে ১৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ
সন্দ্বীপে নৌকাডুবি
১৮ পরিবারকে ১৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ

হাইকোর্ট, ছবি: সমকাল
চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাট এলাকায় নৌকাডুবির ঘটনায় নিহত ১৮ জনের প্রত্যেকের পরিবারকে ১৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপুরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিল সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট (ভার্চুয়াল) বেঞ্চ বুধবার এ রায় দেন।
আগামী দুই মাসের মধ্যে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনকে (বিআইডব্লিউটিসি) এ অর্থ সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম। চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এম জি মাহমুদ শাহীন আর বিআইডব্লিউটিসির পক্ষে ছিলেন সাইফুর রশিদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ওয়েস আল হারুনী।
পরে আব্দুল হালিম সাংবাদিকদের বলেন, এটি একটি ব্যতিক্রমধর্মী রায়। ওই ঘটনায় নিহত ১৮ জনের পরিবারকে রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণ বাবদ ১৫ লাখ টাকা করে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। দেরি হলে ব্যাংকের সুদের হার অনুযায়ী সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সুদ গুনতে হবে। বিআইডব্লিউটিসির আইনজীবী সাইফুর রশিদ বলেন, রায়ের অনুলিপি পাওয়ার পর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে আপিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
লন্ডনে থেকে রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার জহিরুল ইসলাম বুধবার সন্ধ্যায় সমকালকে বলেন, ‘হাইকোর্টের এই রায় যুগান্তকারী। জেলা পরিষদ ও বিআইডব্লিউটিসিকে ৬০ দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণের টাকা পরিশোধ করতে হবে। অন্যথায় সুদসহ দিতে হবে ক্ষতিপূরণ। তারা যদি আপিল করে তবে তার জন্যও প্রস্তুত আছি আমরা।’
তিনি বলেন, ‘এখন ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষে চাইলে যে কেউ হত্যা মামলা দায়ের করতে পারবে। ক্ষতিপূরণের এই রায় সহায়ক হবে তাদের জন্য।’ রিটকারীর পক্ষে আদালতে থাকা আইনজীবী আব্দুল হালিম জানান, ওই ঘটনায় ১৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। আজকের দেওয়া রায়ে ১৮ জনের প্রত্যেক পরিবারকে ৬০ দিনের মধ্যে ১৫ লাখ টাকা করে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ ও বিআইডব্লিউটিসিকে সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। দেরি হলে ব্যাংকের নিয়ম অনুসারে ইন্টারেস্ট দিতে হবে দায়ীদের।
২০১৭ সালে এপ্রিলে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কুমিরা ঘাট থেকে প্রায় ৩৫০ জন যাত্রী নিয়ে একটি সি-ট্রাক সন্দ্বীপের উদ্দেশে রওনা দেয়। সন্ধ্যায় জাহাজটি সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া ঘাটের কাছে পৌঁছায়। সরাসরি ঘাটে ভিড়তে না পারায় সি-ট্রাকটি ঘাটের কিছুটা দূরে থামিয়ে যাত্রীদের নৌকায় করে ঘাটে নেওয়া হচ্ছিল। এ রকম একটি নৌকা যাত্রী নিয়ে ঘাটে যাওয়ার সময় প্রচণ্ড বাতাসে উল্টে যায়। পরে কোস্টগার্ড ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ২২ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হয়, উল্টে যাওয়া নৌকায় ৪০ জন যাত্রী ছিল। পরে ১৮ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত ওই ১৮ জনের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট আবেদন করেন সন্দ্বীপের বাসিন্দা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। প্রথমে আদালত ওই বছর ১৩ এপ্রিল রুল জারি করেন। সেই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গতকাল রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।
মন্তব্য করুন