গায়ের রং নিয়ে খোঁটা, গৃহবধূর আত্মহত্যা
স্বামীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় জান্নাতের লাশ - সমকাল
দেবিদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০২৩ | ২০:১১
কুমিল্লার দেবিদ্বারে গায়ের রং ও খর্বাকৃতি গড়ন নিয়ে স্বামীর অপমান সইতে না পেরে জান্নাত আক্তার (১৯) নামে এক গৃহবধূর আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার সকালে উপজেলার ধামতি গ্রামের আন্দারপাড়ায় স্বামী সালাহ উদ্দিনের বাড়ি থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে স্বামী পলাতক।
জান্নাত একই গ্রামের কাজীপাড়ার সাইফুল ইসলামের মেয়ে। পাঁচ মাস আগে পারিবারিকভাবে অটোচালক সালাহ উদ্দিনের সঙ্গে আড়াই লাখ টাকা যৌতুকে বিয়ে হয় জান্নাতের।
নিহতের স্বজন, পুলিশ ও প্রতিবেশীরা জানান, স্বামী-স্ত্রী ধামতি গ্রামের আন্দারপাড়ায় থাকলেও জান্নাতের শ্বশুর-শাশুড়ির বসবাস কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার কোরপাই এলাকায়। সেখানে তারা কারখানায় কাজ করেন।
বিয়ের কিছুদিন না যেতেই জান্নাতের কালো এবং খাটো গড়ন নিয়ে বেঁকে বসে সালাহ উদ্দিন। প্রায়ই তাঁকে খোঁটা, এমনকি মারধরও করত সে। বিষয়টি নিয়ে উভয় পরিবারের মধ্যে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে।
নিহতের চাচা জাহাঙ্গীর আলমের দাবি, বরপক্ষ জান্নাতকে পছন্দ করার পরই তাদের দাবি অনুযায়ী বিয়ের দিন নগদ আড়াই লাখ টাকা দিয়েছি। মূলত টাকার লোভে সালাহ উদ্দিন সবকিছু জেনে বিয়েতে রাজি হয়। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পর তার আসল চেহারা বেরিয়ে আসে। প্রায়ই সে জান্নাতের ওপর নির্যাতন চালাত। বেশ কয়েকবার এ নিয়ে দুই পরিবারের বসাবসিও হয়েছে। সর্বশেষ শুক্রবার বিকেলে বাবার বাড়ি থেকে জান্নাত স্বামীর কাছে যায়। এরই মধ্যে শনিবার সকালে খবর পাই– জান্নাত ঘরের সিলিং ফ্যানে গলায় ফাঁস নিয়েছে। আমার ভাতিজিকে তারা মেরে ফেলেছে। আমরা এ হত্যার বিচার চাই।
পুলিশের সুরতহাল রিপোর্টে জান্নাতের শরীরে আঘাতের কোনো দাগ পাওয়া যায়নি। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা সাইফুল ইসলাম সন্ধ্যায় অপমৃত্যু মামলা করেছেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দেবিদ্বার থানার ওসি নয়ন মিয়া।