শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল করলেও বন্ধ রয়েছে স্পিডবোট চলাচল। বহু বছর এই নৌরুটে অবৈধ নৌযানটি চলাচল করলেও আসন্ন ঈদ-উল আজহার আগে ও পরে নৌরুটে স্পিডবোট চলাচল বন্ধ থাকবে। গত ঈদ-উল ফিতরের সময় স্পিডবোট দুর্ঘটনায় ২৬ জনের প্রাণহানির ঘটনায় বন্ধ হয়ে পড়ে স্পিডবোট চলাচল। এর মধ্যে গত ১৬ জুলাই মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত আসন্ন ঈদ-উল আজহার প্রস্তুতি সভায়ও ঈদের আগে স্পিডবোট চলাচল বন্ধ থাকবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এমনকি ঈদের পরেও চলাচল বন্ধ থাকবে-এমন সিদ্ধান্ত হয়। অনুষ্ঠিত ওই সভায় বিআইডব্লিউটিসি, বিআইডব্লিউটিএ, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, র‌্যাব, আনসার, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মাদারীপুর ও মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করবে। ফেরিতে কোরবানির গরুবাহী ট্রাক অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপার করা হবে। গণপরিবহনেও থাকবে অর্ধেক যাত্রী। নৌরুটের উভয়ঘাট নিয়ন্ত্রণে একাধিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ, র‌্যাব, ফায়ার সার্ভিস, মেডিকেল টিম, আনসারসহ বিপুল সংখ্যক আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্ব পালন করছে। কেউ আইন অমান্য করলে জেল-জরিমানাসহ কঠোর শাস্তির আওতায় নেওয়া হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিমুলিয়া-বাংলাবাজার-মাঝিকান্দি নৌরুটে সাড়ে ৪ শতাধিক স্পিডবোট চলাচল করেছে বছরের পর বছর। সেগুলো বড়, মাঝারি ও ছোট-এই তিন ধরনের। এর মধ্যে ২২০টি স্পিডবোটের মালিক মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার এবং বাকি ১৮০টি স্পিডবোটের মালিক মাদারীপুরের কাওড়াকান্দি, কাঠাঁলবাড়ী ও শরীয়তপুরের মাঝিকান্দি এলাকার। এসব স্পিডবোট দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে শিশু যাত্রীসহ পদ্মা পারাপার হতো দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার যাত্রীরা। কিন্তুু গত ঈদ-উল ফিতরের সময় স্পিডবোট দুর্ঘটনায় ২৬ জনের প্রানহানির ঘটনায় স্পিডবোট চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে বলে ঘাট সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএ’র শিমুলিয়া বন্দর কর্মকর্তা শাহ আলম জানান, নৌরুটে চলাচলরত স্পিডবোট গুলোর কোন রেজিস্ট্রেশন নেই। অবৈধ ভাবেই বছরের পর বছর ধরে চলাচল করছিল। তাই দুই বছর আগে ডিজি শিপিং থেকে একজন ইন্সপেক্টর এসব স্পিডবোট নিবন্ধন করার জন্য ঘাট এলাকায় অবস্থান নিলেও ইজারাদার ও চালকরা সহযোগিতা না করায় নিবন্ধন কার্যক্রম থেমে যায়।

শিমুলিয়া নদী বন্দরের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, স্পিডবোট চালকদের নেই কোন ড্রাইভিং লাইসেন্স, নেই রেজিষ্ট্রেশন। আলোকবাতি ও হর্ন নেই অবৈধ স্পিডবোটগুলোতে। আর এভাবেই দীর্ঘ বছর ধরে অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করে বেপোরোয়াভাবে অবৈধ স্পিডবোট চলাচল অব্যাহত থাকায় এ নৌরুটে প্রায়ই ঘটছে স্পিডবোট ডুবির ঘটনা। এখন এটি বন্ধ থাকায় ঝুঁকি কমেছে।