ঢাকা বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪

নৌকার শক্ত চ্যালেঞ্জ ৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী

নৌকার শক্ত চ্যালেঞ্জ ৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী

আব্দুল মজিদ খান, মোহাম্মদ মিলাদ গাজী, সায়েদুল হক সুমন

রাসেল চৌধুরী, হবিগঞ্জ

প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০২৩ | ২২:১৮

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে হবিগঞ্জের ৪টি সংসদীয় আসন থেকে দলীয়, স্বতন্ত্রসহ মোট ৪০ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনসহ ৩ হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী।
স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে আলোচনা করে জানা যায়, এসব হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থীকে নিয়ে এরই মধ্যে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের মনোনীত প্রার্থীরা। এসব স্বতন্ত্র প্রার্থী সবাই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েও বঞ্চিত হয়েছেন। তারা সবাই শক্ত চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন হবিগঞ্জ-১, হবিগঞ্জ-২ ও হবিগঞ্জ-৪ আসনের নৌকা প্রার্থীদের। সেদিক থেকে সুবিধাজনক অবস্থানে আছে হবিগঞ্জ-৩ আসনটি। এ আসনে নৌকার মাঝি হয়েছেন টানা তিনবারের এমপি ও হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু জাহির। 

হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য শাহনওয়াজ মোহাম্মদ মিলাদ গাজীর পরিবর্তে এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য, হবিগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুশফিক হুসেন চৌধুরী, যার কারণে এ আসন থেকে এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন মিলাদ গাজী। একই সঙ্গে এ আসনে নৌকার প্রার্থীর শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক এমপি আমাতুল কিবরিয়া চৌধুরী কেয়া। এছাড়াও একই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান এমপি মিলাদ গাজীর ভাই গাজী মো. শাহেদ। 
হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) আসনের বর্তমান এমপি আব্দুল মজিদ খানের পরিবর্তে নৌকার প্রার্থী হয়েছেন হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েল। নৌকা না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন মজিদ খান। তাই ময়েজ উদ্দিন শরীফ ও এমপি মজিদ খানের মধ্যে ভোটের লড়াই জমে ওঠার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনের বর্তমান এমপি বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী। এবারও তিনিই নৌকার মাঝি। প্রতিমন্ত্রী হলেও জনপ্রিয়তা এবং সাধারণের মাঝে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতার কারণে তাঁর শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে এরইমধ্যে আলোচনায় রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
হবিগঞ্জের সচেতন মহল মনে করছেন, শেষ পর্যন্ত যদি হবিগঞ্জ-১ আসনে কেয়া চৌধুরী, হবিগঞ্জ-২ আসনে আব্দুল মজিদ খান ও হবিগঞ্জ-৪ সায়েদুল হক সুমন নির্বাচনী মাঠে থাকেন তা হলে ভোটের লড়াই হবে জমজমাট। যেখানে নৌকার ভাইটাল প্রার্থীদের শক্ত টক্কর দেবেন এসব হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী।

হবিগঞ্জ-৪ আসনের আওয়ামী লীগপন্থী স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন জানান, দলীয় প্রধানের নির্দেশনা অনুসারেই তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। দলের হাইকমান্ড থেকে প্রত্যক্ষ নির্দেশনা রয়েছে কোনো আসন থেকে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী যেন নির্বাচনে জয়ী হতে না পারেন। প্রতিটি আসনে দলের একজন ডামি প্রার্থী সে ক্ষেত্রে মাঠে থাকবেন। নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি ও সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়ানো তার লক্ষ্য নয়। তাঁর মূল লক্ষ্য চুনারুঘাটসহ এ আসনের ভোটার তথা সাধারণ মানুষের ভাগ্য বদল।
বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত হবিগঞ্জ-২ আসনের বর্তমান এমপি আব্দুল মজিদ খান জানান, একাধিকবার তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। প্রতিবারই নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নে মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন। এবারও তিনি দলের প্রার্থী হতে নৌকা চেয়ে পাননি। তবে সাধারণ মানুষ এবং স্থানীয় নেতাকর্মীর প্রত্যাশার চাপ থাকার পাশাপাশি তাঁর এলাকার মানুষ যাতে বঞ্চিত না হয় সেটি নিশ্চিত করতেই তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। প্রতীকের চেয়ে তাঁর কাছে দলীয় প্রধানের আদর্শ বাস্তবায়নই বড় বিষয়।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেব নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে নিজের জনপ্রিয়তা এবং জনপ্রত্যাশার  কথা জানিয়েছেন আমাতুল কিবরিয়া চৌধুরী কেয়া।

whatsapp follow image

আরও পড়ুন

×