নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে মদিনাতুল উলুম ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় রাতের খাবার খেয়ে `বিষক্রিয়ায়’ ১৭ শিশু অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে।

সোমবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে। খবর পেয়ে সোমবার রাতেই ওই মাদ্রাসার  প্রধানসহ ৬ শিক্ষককে আটক করা হয়েছে। 

মদিনাতুল উলুম ইসলামিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার সুপারিনটেনডেন্ট ইসমাইল হোসেন সমকালকে জানান, সোমবার এশার নামাজের পরে মাদ্রাসার আবাসিক বিভাগের ২২জন ছাত্র মাদ্রাসাতেই রান্না করা মাংস দিয়ে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমাতে যায়। একপর্যায়ে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ১৮ জন ছাত্র পেট ব্যথায় বমি করতে শুরু করে।  মাদ্রাসার একজন আবাসিক শিক্ষক তখন স্থানীয় পল্লী চিকিৎসককে মাদ্রাসায় ডেকে আনেন। 

পরবর্তীতে পল্লী চিকিৎসকের পরামর্শে অসুস্থ ১৮ জন ছাত্রকে সোমবারর রাত সাড়ে  ১১ টার দিকে মাইজদির একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে স্থান সংকুলান না হওয়ায় রাত ১২টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয় তাদের। 

সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিশান নূর হাদী (১০) নামে এক শিশু মারা যায়। নিশান বেগমগঞ্জ  উপজেলার ৭নং একলাশপুর ইউনিয়নের পূর্ব একলাশপুর গ্রামের ইতালী প্রবাসী মো.  আনোয়ার মিয়ার ছেলে।  সে মদিনাতুল উলুম ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও এতিম খানার নূরানী বিভাগের প্রথম ছাত্র ছিল।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অন্য ছাত্ররা হলেন সামির, মোজাম্মেল, পারভেজ, শাওন, নূর হোসেন, মেহরাজ, রিফাত, মামুন, মারুফ, শিপন, আলিফ, শাহন, আরমান, আব্দুর রহিম, আশিক, মামুন, পারভেজ, সোহাগ। তাদের সবার বয়স ৯ থেকে ১২ বছরের মধ্যে।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা.সৈয়দ মহিউদ্দিন আব্দুল আজিম সমকালকে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে খাদ্যে বিষক্রিয়া (ফুড ফয়জনিং) এর কারণে রাতের খাবার খেয়ে মাদ্রাসার ছাত্ররা অসুস্থ হয়ে পড়ে। ভর্তি ছাত্রদের মধ্যে ৪-৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।’

বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ কামরুজ্জামান সিকদার বলেন , ‘খাবারের সাথে কোনো বিষাক্ত পদার্থ মেশানো হয়েছে কিনা তা তদন্ত করতে বাকি খাবার পরীক্ষার জন্য জব্দ করা হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। পরবর্তীতে এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আটককৃত শিক্ষকরা হচ্ছেন, সুপার হাফেজ মাওলানা ইসমাইল হোসেন, শিক্ষক হাফেজ হাসান, বেলাল হোসেন, সাহেদ হোসেন, মিজানুর রহমান ও দাউদ ইব্রাহীম।

ওসি মুহাম্মদ কামরুজ্জামান সিকদার জানান, এ ঘটনায় নিহত শিশুর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।