ঘটনা ছোটই- উপজেলা পরিষদ চত্বরে লাগানো ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ। কিন্তু ছোট্ট ঘটনাকে ঘিরেই বরিশাল নগরীতে ঘটে গেছে তুলকালাম কাণ্ড। এর জেরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসায় হামলা হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ-যুবলীগের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনসার সদস্যদের গুলি ছুড়তে হয়েছে। প্রতিবাদে বুধবার মধ্যরাত থেকে সড়ক ও নৌ যোগাযোগ অচল করে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসন দুটি মামলা করেছে। দুটিতেই বরিশালের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এরই মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন ১৫ নেতাকর্মী।
বিপরীতে ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে মেয়রের বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে দলটির স্থানীয় নেতারা এ দাবি জানান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ১৫ আগস্ট উপলক্ষে সদর আসনের সংসদ সদস্য পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীমের পক্ষে উপজেলা পরিষদ চত্বরে ব্যানার-ফেস্টুুন লাগানো হয়েছিল। বুধবার রাত ১০টার দিকে সিটি করপোরেশনের কর্মী পরিচয়ে একদল যুবক সেগুলো অপসারণ করতে গেলে দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা বাধা দেন। একপর্যায়ে মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর অনুসারী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ইউএনও মুনিবুর রহমানের বাসভবনে হামলা করলে আনসার সদস্যরা গুলি চালান। পরে পুলিশ আসে। রাত ২টা পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়।
এদিকে বরিশালে ইউএনওর বাসভবনে হামলার ঘটনায় যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে এ কথা জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, 'এ অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার আগেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাকে বলেছেন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকেও বলে দিয়েছেন, ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে যারা যারা জড়িত সবাইকে শনাক্ত করতে, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।'
বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনে হামলার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনও। সংগঠনটি অবিলম্বে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে।
সংগঠনটির সভাপতি ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব কবির বিন আনোয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জরুরি সভার পর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বরিশালে ইউএনওর বাসভবনে সংঘটিত ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত হয়, 'আইনের মাধ্যমেই দুর্বৃত্তদের মোকাবিলা করা হবে' এবং 'আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে'।
শুরু যেভাবে :ইউএনওর বাসভবনে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আনসার বাহিনীর প্লাটুন কমান্ডার আবদুর রহমান গাজী জানান, সিটি করপোরেশনের লোক পরিচয়ে একদল যুবক পরিষদ কম্পাউন্ডের মধ্যে ঢুকে ব্যানার ও পোস্টার অপসারণের চেষ্টা চালায়। অনুমতি ছাড়া এগুলো অপসারণে বাধা দেওয়া হলে তারা গালাগাল শুরু করেন। কিছু সময় পরেই সেখানে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নগরীর পরিচিত কিছু নেতা এসে ইউএনওর বাসভবনে ঢোকার চেষ্টা করেন। এতে বাধা দিলে তার (আবদুর রহমান) মুখে ঘুসি মারেন একজন। আরেকজন কলার ধরে টানাহ্যাঁচড়া করেন। এরপর তারা বাসভবনের ফটক ভেঙে নিচতলায় ঢুকে পড়ার চেষ্টা করেন। তাদের হামলায় তিন আনসার সদস্য ও স্থানীয় একজন আহত হন। এ সময় তাদের ঠেকাতে আনসার সদস্যরা ফাঁকা রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করেন।
ইউএনও মো. মুনিবুর রহমান বুধবার রাতে বলেন, বাইরে হট্টগোল শুনে তিনি বাসভবন থেকে বেরিয়ে আসেন। এ সময় নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ বাবু, জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আতিকুল্লাহ মুনিম, সাজ্জাদ সেরনিয়াবাত, সাংগঠনিক সম্পাদক রাজীব খানসহ অনেক নেতাকর্মী তাকে ঘিরে ধরে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকেন। একপর্যায়ে তারা বাসভবনের নিচতলায় ঢুকে পড়েন। এ সময় আত্মরক্ষায় তিনি আনসার সদস্যদের 'প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ' নিতে অনুরোধ জানান।
রাত ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদ এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে আওয়ামী লীগের শত শত নেতাকর্মী এসে ওই এলাকায় বিক্ষোভ করতে থাকেন। একপর্যায়ে তারা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে রাত ২টা পর্যন্ত। এর মধ্যে মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ সেখানে গেলেও উত্তপ্ত পরিস্থিতির মুখে ফিরে যান।
আওয়ামী লীগ যা বলেছে :গতকাল বিকেলে মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেন, নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন শাখার কর্মীরা রাতে উপজেলা পরিষদ চত্বরে গিয়েছিলেন। এ সময় ইউএনও মুনিবুর রহমান বেরিয়ে এসে দম্ভোক্তি দেখিয়ে তাদের বাধা দেন। খবর পেয়ে মেয়রের নির্দেশে সেখানে যান নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হাসান মাহমুদ বাবু। ইউএনও তাদের সঙ্গে অশালীন ভাষা ব্যবহার করেন। একপর্যায়ে আনসার সদস্যদের কাছ থেকে অস্ত্র নিয়ে তিনি নিজেই গুলি করেন। হাসান মাহমুদ বাবুকে ইউএনও টেনেহিঁচড়ে তার বাসভবনে নিয়ে আটকে রাখেন। মেয়র ঘটনাস্থলে গিয়ে নিজের পরিচয় দেওয়ার পরও আনসার সদস্যরা গুলি করতে থাকেন। পরে পুলিশ এসেও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পেটায়।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, বুধবার রাতের ঘটনায় ৬০ জনের বেশি নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। লাঠিচার্জে আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। আহতরা আত্মগোপনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। মিথ্যা দুটি মামলা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারে বাসায় বাসায় অভিযান চালানো হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, প্রশাসনের আচরণ দেখে মনে হচ্ছে, তারা বিশেষ কোনো গোষ্ঠীর হয়ে কাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ধৈর্যের পরিচয় দিচ্ছেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, দলের পক্ষ থেকে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়টি তারা পরে দেখবেন।
সরকারি দপ্তরে রাতে পরিচ্ছন্ন কাজ করতে যাওয়া প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক হোসেন বলেন, 'সিটি করপোরেশনের নিয়মই হচ্ছে রাতে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো।' সিটি করপোরেশনের কাজে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপস্থিতির প্রসঙ্গ তোলা হলে আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, তারাও সিটি করপোরেশনের চাকরিজীবী।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস সংবাদ সম্মেলনে বলেন, শোকের আগস্ট মাসে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর এমন হামলা গভীর ষড়ষন্ত্র মনে হচ্ছে। আমরা বিষয়টিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ আশা করি।
মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
১২ ঘণ্টা অচল :বুধবার রাতের ঘটনার জেরে মধ্যরাত থেকে বরিশাল থেকে সকল বাস ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ওপর এলোপাতাড়িভাবে বাস-ট্রাক রেখে দেওয়া হলে বরিশালসহ পটুয়াখালী, বরগুনা ও ঝালকাঠি পথে চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আবার সব ধরনের যানবহন চলাচল শুরু হয়।
বরিশাল বাস মালিক গ্রুপের যুগ্ম সম্পাদক কিশোর কুমার দে সমকালকে বলেন, সাধারণ জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে মেয়র তাদের বাস চালানোর নির্দেশ দিলে দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বাস চলাচল শুরু করেছে। একই কথা জানিয়েছেন বরিশাল-পটুয়াখালী মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন।
এ ছাড়া বুধবার রাতের ঘটনার প্রতিবাদে বরিশাল সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বৃহস্পতিবার কলম বিরতি কর্মসূচি পালন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, তারা কাউকে পরিবহন বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেননি। মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা গুলি করা হয়েছে শুনে মালিক-শ্রমিকরা স্বেচ্ছায় পরিবহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
কঠোর অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী :বুধবার রাতের ঘটনার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর অবস্থান নেয়। ইউএনওর বাসভবনে আটক আওয়ামী লীগ নেতা হাসান মাহমুদ বাবুকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য রাত ২টা পর্যন্ত বিক্ষোভ সংঘর্ষ চললেও পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু হয় ব্যাপক ধরপাকড়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর কালীবাড়ি সড়কে মেয়রের বাসভবন পুলিশ ঘিরে রাখে। একই সময়ে শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি আওয়ামী লীগ নেতা আহমেদ শাহরিয়ার বাবু ওরফে জিএস বাবু, হারুন অর রশিদ ও তানভীরকে ডিবি পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ ছাড়া নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন ফিরোজ ও জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি অলিউল্লাহ অলিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রধান আসামি মেয়র :কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম জানান, বুধবার রাতে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুনিবুর রহমান বাদী হয়ে ২৮ জনের নামোল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৩০-৪০ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। এ ছাড়া সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে আরেকটি মামলা করেছে।
ওসি জানান, সন্ধ্যার পর এজাহারভুক্ত আরও দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছে ১৫ জন। এর মধ্যে চারজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ১১ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মহানগর পুলিশের উপকমিশনার আলী আশরাফ মিঞা বলেন, মামলা দুটিই দায়ের হয়েছে কোতোয়ালি মডেল থানায়। দুটিতেই প্রধান তথা হুকুমের আসামি করা হয়েছে সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে। দুটি মামলারই দুই নম্বর আসামি মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ বাবু। এ ছাড়া উভয় মামলায় আসামি করা হয়েছে জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজীব হোসেন খান, সহসভাপতি সাজ্জাদ সেরনিয়াবাত ও আতিকুল্লাহ মুনীম এবং মহানগর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক সুমন সেরনিয়াবাতকে।
উপকমিশনার বলেন, মামলার অভিযোগ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক মো. জসীম উদ্দীন হায়দার জানান, বৃহস্পতিবার রাত থেকে ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে নগরীতে ১০ প্লাটুন বিজিবি টহল দেবে। দায়িত্ব পালন করার জন্য পিরোজপুর ও পটুয়াখালী থেকে ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে ডেপুটেশনে বরিশাল জেলা প্রশাসনের অধীনে আনা হয়েছে।
প্রশাসন যা বলল :হামলার পর বুধবার গভীর রাতে সদর উপজেলার ইউএনওর বাসায় যান বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল হাসান বাদল, বরিশাল মেট্রোপলিটনের পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান, ডিআইজি এসএম আক্তারজ্জামান, র‌্যাব-৮-এর অধিনায়ক জামিল হোসেন, বরিশাল জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দারসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, পুরো বিষয়টি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যারা অন্যায় করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (দক্ষিণ) ফজলুল করিম জানান, ইউএনওর অফিস ও বাসভবন সংরক্ষিত এলাকা। সেখানে অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করা সঠিক হয়নি। এর পরও সেখানে প্রবেশ করে ইউএনওর বাসভবনে হামলা চালানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে পুলিশের ওপরও হামলা হয়।
ঘটনার পর গভীর রাতে মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার অংশ হিসেবে সিটি করপোরেশনের কর্মীরা রাতে উপজেলা পরিষদের গেলে ইউএনও বাধা দেন। খবর পেয়ে তিনিও ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। ইউএনওর নির্দেশে আনসাররা গুলি করলে জীবন রক্ষায় তিনি সেখান থেকে চলে আসেন।
এদিকে বরিশালের ঘটনায় তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। গতকাল রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারি বাসভবনে হামলার ঘটনা তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্তের মাধ্যমে বেরিয়ে আসবে, কার ভূমিকা কী ছিল। কেউ ভুল-ভ্রান্তি করে থাকলে তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিষয় : বরিশাল উত্তপ্ত

মন্তব্য করুন