বরিশাল সদর উপজেলা চত্বরে ব্যানার, ফেস্টুন অপসারণকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় ব‌রিশাল সি‌টি কর‌পো‌রেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সের‌নিয়াবাত সা‌দিক আব্দুল্লাহের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর বরিশাল নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। 

বুধবার রাতে বরিশাল নগরের সিঅ্যান্ডবি সড়ক এলাকায় সদর উপজেলা পরিষদ কাযার্লয় চত্বরে ব্যানার- ফেস্টুন অপসারণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সরকারি বাসভবনে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা করে। এসময় দায়িত্বরত আনসারর সদস্যরা তাদের ওপর গুলি ছুঁড়লে সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ। পরে ইউএনও ও পুলিশের মামলায় আসামি করা বরিশালের মেয়রকে।

নগরবাসীর অভিযোগ, ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে  সিটি করেপােরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সড়ক ও বাসাবাড়ি থেকে বর্জ্য অপসারণের কাজে আসেননি। নগরের বিভিন্ন অলিগলি, কাঁচা বাজারের পাশে জমে থাকা ময়লার স্তুপ থেকে আসা দুর্গন্ধ এতটাই তীব্র যে শ্বাস নেয়াই দায়।

নগরীর কাশীপুর এলাকার বা‌সিন্দা মাইনুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ‘দুই দিন ধ‌রে প্রধান প্রধান সড়ক ও অলিগলিতে ময়লা আবর্জনা পড়ে আছে।  সদর উপজেলার ইউএনওর সঙ্গে  বুধবার রাতে ঝা‌মেলার পর সি‌টি কর‌পো‌রেশ‌নের প‌রিচ্ছন্নকর্মীরা বর্জ্য অপসারণ করছে না। ফলে পরিবেশ বিষিয়ে উঠছে।’

শুক্রবার বিকেলে নগরের বটতলা, বাংলা বাজার,নবগ্রাম রোড, বিএম কলেজ সড়ক,  হাসপাতাল রোড, ভাটিখানা, আমানতগন্জ, কাঠপট্টি,সিঅ্যান্ডবি রোডসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে সড়কের পাশে বর্জ্যের স্তুপ দেখা গেছে। 

বিএম কলেজের সামনে ময়লার স্তুপ বাড়ছে। এতে ওই সড়কসংলগ্ন বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। নগরের সিঅ্যান্ডবি সড়কটি ঢাকা-বরিশাল মহাসড়‌কের অংশ। এই মহাসড়কের  দুই পাশে এবং সড়কের মাঝখানে আবর্জনার স্তুপ থাকায় যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।  

নগরের মনসুর কোয়ার্টারের বাসিন্দা এজাজ রেজা ও গির্জামহল্লার  বাসিন্দা আনোয়ারুল হক জানান, প্রতি‌দিন প‌রিচ্ছন্নকর্মীরা বাসায় এ‌সে ময়লা নি‌য়ে যেত, দুদিন ধরে তা বন্ধ। দুইদিন পর বাধ্য  হ‌য়ে রাস্তায় ময়লা ফেলেছেন অনেকে।  

সাগরদীর বাসিন্দা সিএনজি চালক মেহেদী মাসুদ রানা ব‌লেন, ‘কা‌শিপুর থেকে আমতলার মোড় পর্যন্ত ২ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে বর্জ্যের স্তূপ। সদর উপজেলা পরিষদের সামনেও বর্জ্য ফেলে রাখা হয়েছে। এতে  গাড়ি চলাচলে সমস্যা হচ্ছে।’

বিএম ক‌লেজ এলাকার প্রফেসর গ‌লির বাসিন্দা শিক্ষক মো. আক্তারুজ্জামান খান জানান, তার বাসার গলির মু‌খে দু‌দিন ধ‌রে বর্জ্যের স্তুপ পড়ে আছে। বৃষ্টির পানি ময়লার স্তুপ ধুয়ে নিয়ে যাচ্ছে। মানুষের পায়ে পায়ে ময়লা বাসাবাড়িতে যাচ্ছে।

বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম কেন বন্ধ রয়েছে তা জানতে  সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক আহাম্মদকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। প্রধান প‌রিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা র‌বিউল ইসলামের ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।  

সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র -২ রফিকুল ইসলাম খোকন সমকালকে বলেন, ‘মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করার কারণে করপোরেশনের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তবে শনিবারের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।’ 


বিষয় : বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম র‌নিয়াবাত সা‌দিক আব্দুল্লাহ বরিশাল সদর উপজেলা

মন্তব্য করুন