নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ঘরে ঢুকে গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও সেই দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করার মামলায় আদালতে বাদীর জবানবন্দি শেষ হয়েছে।

সোমবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত তার জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক জয়নাল আবেদীন জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এর আগে বৃহস্পতিবার একই আদালতে বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।

বাদীর জবানবন্দি গ্রহণের সময় আদালতে ১৩ আসামির মধ্যে ৯ জন উপস্থিত ছিলেন। চার আসামি পলাতক রয়েছেন। আসামিদের মধ্যে বাহিনীপ্রধান দেলোয়ার নির্যাতনের শিকার গৃহবধূকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন। কয়েকজন হাসাহাসিও করেন।

জবানবন্দি শেষে আদালতের বাইরে এসে ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন ওই নারী। তিনি বলেন, কোনো কারণে আসামিরা বেরিয়ে এলে তার জীবন ঝুঁকিতে পড়বে। এ সময় জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ ও নারীনেত্রী তাসলিমা আক্তার তাকে সাহস দিয়ে বলেন, ন্যায়বিচার পেতে এবং আসামিদের শাস্তি নিশ্চিত করতে তাকে সহযোগিতা দেওয়া হবে। আদালতে শুনানিকালে নারীনেত্রী আফসানা নীলা উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মামুনুর রশিদ লাবলু জানান, আসামিদের মধ্যে আবুল কালাম ও মাইন উদ্দিন সাজুর পক্ষে উকিল না থাকায় তারা নিজেরাই আদালতে কথা বলেছেন। এ সময় বিচারক তাদের পক্ষে উকিল না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে আসামিরা জানান, উকিল নিয়োগ করার মতো আর্থিক সামর্থ তাদের নেই।

মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ১৩ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে।

২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাতে বেগমগঞ্জে রাতের অন্ধকারে বসতঘরে ঢুকে ওই নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করেন আসামিরা। সেই নির্যাতনের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে পরে তাকে কুপ্রস্তাব দেয় তারা। এতে রাজি না হওয়ায় ২০২১ সালের ৪ অক্টোবর তারা সেই ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। সে রাতেই ওই নারী দেলোয়ার বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড নুর হোসেন বাদলসহ ৯ জন এবং অজ্ঞাত সাত-আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।