ঢাকা বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

বস্তা বদলের কৌশলে অবৈধ চিনির ব্যবসা

বস্তা বদলের কৌশলে অবৈধ চিনির ব্যবসা

মিনি ট্রাকে আজমিরীগঞ্জের রনিয়া নদীঘাট থেকে নেওয়া হচ্ছে ভারতীয় চিনি -সমকাল

বানিয়াচং (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩ | ২২:৩৬

আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন বাজার থেকে প্রতিদিন শত শত বস্তা ভারতীয় চিনি অবৈধভাবে পাচার করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।
প্রশাসনের চোখে ধুলো দিতে সুকৌশলে বস্তা বদলে এসব চিনি টমটম, মিনি ট্রাক ও নদীপথে নৌকায় করে নিয়ে যাওয়া হয় নির্দিষ্ট গুদামে। সেখান থেকে এই চিনি চলে যায় স্থানীয় হাটবাজার ও দেশের অন্যান্য জায়গায়।
সূত্র জানায়, সীমান্তবর্তী জেলা সুনামগঞ্জ থেকে প্রথমে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার ২ নম্বর বদলপুর ইউপির পাহাড়পুর বাজারে কথিত এক ব্যবসায়ীর কাছে আসে চিনির চালান। সেখান থেকে তা পাহাড়পুর বাজারের পার্শ্ববর্তী শাল্লা উপজেলার প্রতাপপুর বাজারে গুদামজাত করা হয়। সেই 
গুদাম থেকে পর্যায়ক্রমে ভারতীয় চিনির বস্তা পরিবর্তন করে দেশীয় চিনির বস্তায় ভরে তা মিনি ট্রাক, টমটম ও নৌকায় করে আজমিরীগঞ্জ ও কাকাইলছেও পাঠানো হয়।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, নিয়মিত বাজারজাত করা ছাড়াও বাজার চড়া হলে বেশি লাভের জন্য চিনি মজুত করা হয়। সম্প্রতি আজমিরীগঞ্জের পাহাড়পুর বাজারের ৩-৪টি গুদাম, পুরাতন সিনেমা হলসংলগ্ন দুটি গুদাম, বাঁশমহাল রোডের একটি গুদাম এবং কাকাইলছেও বাজারের কৃষিব্যাংকসংলগ্ন কয়েকটি গুদামে প্রায় দুই হাজার বস্তা ভারতীয় চিনি মজুত রাখা হয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারের চিনির তুলনায় ভারতীয় চিনির দাম প্রতি কেজিতে ৩০ টাকা কম হওয়ায় দেশি চিনি কেউ কিনতে চান না। অনেকে আবার ভারতীয় চিনির বস্তা পরিবর্তন করে তা দেশি চিনি বলে বেশি দামে বিক্রি করছেন। বাজার তদারকি এবং ভারতীয় চিনির জোগান বন্ধে প্রশাসনের তেমন তৎপরতা নেই বলেও অভিযোগ করেন অনেকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, চোরাকারবারি চক্রের প্রধান ভুয়া অকশনের কাগজ তৈরি করে অবৈধভাবে আনা ভারতীয় চিনির বস্তা পরিবর্তন করে দেশীয় চিনির বস্তায় ভরে। এভাবে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলছে অবৈধভাবে আনা ভারতীয় চিনির রমরমা ব্যবসা। এতে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ হবিগঞ্জের সহকারী পরিচালক দেবানন্দ সিনহা জানান, অবরোধের কারণে বাজার মনিটরিং কম হচ্ছে। সঠিক তথ্য পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইউএনও জুয়েল ভৌমিক জানান, বিচ্ছিন্নভাবে হলেও চিনির অবৈধ কারবারের বিষয়টি তাদের নজরে এসেছে। তবে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ পাননি। তিনি সঠিক তথ্য দিয়ে প্রশাসনকে সহায়তার আহ্বান জানান।

whatsapp follow image

আরও পড়ুন

×