নোয়াখালী শহরের মাইজদীতে আওয়ামী লীগের তিন গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ও সমাবেশকে কেন্দ্র করে জারি করা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিলের চেষ্টা করায় লাঠিপেটা করে মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

এ সময় মিছিল থেকে এবং শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১১ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে ১৪৪ ধারা অমান্য করে স্থানীয় সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর অনুসারী ৩০-৪০ জনের একদল নেতা কর্মী নোয়াখালী গণপূর্ত ভবন থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ের দিকে যাত্রা করে। এক পর্যায়ে মিছিলকারীরা পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। পুলিশ মিছিলকারীদের সরে যেতে নির্দেশ দিলে তারা পুলিশের সঙ্গে বাক বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এসময় পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠি চার্জ করে। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হন। পরে ঘটনাস্থল থেকে এবং শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে জড়ো হওয়ার অভিযোগে পুলিশ ১১ জনকে আটক করেছে।

এছাড়া শহরের কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে মাঠে অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

সদর উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি এ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন বলেন, জেলা প্রশাসন রোববার রাতে শহরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই পূর্ব ঘোষিত সোমবারের কর্মসূচি স্থগিত করেছি। পাশাপাশি নেতা কর্মীদেরকে কোন প্রকার ঝামেলা না করার জন্য কঠোর ভাবে নির্দেশ দিয়েছি।

নোয়াখালী শহর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র মো. শহীদ উল্যাহ খান সোহেল জানান, জেলা প্রশাসনের অনুরোধে পৌরসভায় তার পূর্ব নির্ধারিত কর্মী সমাশে স্থগিত করা হয়েছে।

সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর অনুসারী ও নোয়াখালী শহর আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ পিন্টু জানান, সকালে জেলা আওয়ামীলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি বাস্তবায়নের দাবিতে তাদের পূর্ব নির্ধারিত সমাবেশ স্থগিত করা হয়েছে। দুপুরের দিকে কিছু নেতাকর্মী বিক্ষোভ মিছিল ও দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা কালে ১১ জনকে আটক করে পুলিশ। অবশ্য এদেরকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।

নোয়াখালী সুধারাম মডেল থানার ওসি মো. শাহেদ উদ্দিন জানান, ১৪৪ ধারা আইন ভঙ্গ করে মিছির বের করার চেষ্টা করলে ১১ জনকে আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, আওয়ামীলীগের তিন গ্রুপের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শহরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা দেখা দিলে রোববার রাতে নোয়াখালী পৌরসভা এলাকায় সোমবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ভোর ৫টা থেকে শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। শহর এলাকায় পুলিশ ও র‌্যাবের টিম টহল দিচ্ছে। এছাড়াও সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর সমর্থিত নেতা কর্মীরা বিভিন্ন স্থানে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং সেখান থেকে ১১ জনকে আটক করে। পরিস্থিতি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।