
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে সংরক্ষণের অভাবে জীর্ণকায় ভৈরব মজুমদারের বাড়ি- সমকাল
'ভাটির বাঘ'খ্যাত শমসের গাজীর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। পলাশীর যুদ্ধের পর শরীরে বিষ প্রয়োগ করে হত্যা করা হয়েছিল তাকে। সংরক্ষণের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে ইতিহাসের এই আলোচিত মানুষ ভৈরব মজুমদারের ৩০০ বছরের জমিদারবাড়ি। ১৭৪৮ সালে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগন্নাথদিঘি ইউনিয়নের বরদৈন মুন্সিবাড়িতে দৃষ্টিনন্দন এই দোতলা বাড়িটি তৈরি করেছিলেন তিনি। দরজা-জানালা ভেঙে গেছে বাড়িটির। কিন্তু কালের সাক্ষী হয়ে এখনও দাঁড়িয়ে আছে সুপ্রাচীন দোতলা এ ভবনটি।
স্থানীয় অধিবাসীদের মতে, ভারতের উত্তরপ্রদেশ থেকে ১৬০০ সালে এ দেশে আসেন ভৈরব মজুমদারের পূর্বপুরুষ। মোগল সাম্রাজ্যের সেনাবাহিনীর উত্তরপ্রদেশের একটি ইউনিটের দায়িত্বে ছিলেন তার পিতা রঘুনারায়ণ মজুমদার। পরে তিনি এ অঞ্চলের বিশাল এক মৌজার মালিক হয়ে যান।
১৭৩৯-৪০ সালের কথা। ত্রিপুরার মহারাজা কৃষ্ণ মাণিক্যকে খাজনা দেওয়া বন্ধ করে দেন পাশের অঞ্চল বর্তমান বৃহত্তর নোয়াখালীর জমিদার শমসের গাজী। যাকে তখন সবাই ডাকত 'ভাটির বাঘ' নামে। মহারাজার বাহিনী তখন যুদ্ধে নামে শমসের গাজীর বিরুদ্ধে। আর তার পাশে দাঁড়ান জমিদার ভৈরব মজুমদার নিজের বাহিনী নিয়ে। এ যুদ্ধে পরাজিত হন মহারাজা। কিন্তু পলাশীর যুদ্ধে ব্রিটিশপক্ষ জয়ী হওয়ার পর তাদের সহায়তা নিয়ে আবারও ত্রিপুরার ক্ষমতায় আসেন কৃষ্ণ মাণিক্য। এ সময় কৃষ্ণ মাণিক্যের হাতে বন্দি হন ভৈরব মজুমদার। কিন্তু সুদর্শন ভৈরব মজুমদারের সৌন্দর্যে বিমোহিত রানী রাজাকে অনুরোধ করেন তাকে মুক্ত করে দিতে। রাজা কৃষ্ণ মাণিক্য রানীর কথা রাখেন বটে, কিন্তু মুক্ত করে দেওয়ার আগে বিষ প্রয়োগ করেন ভৈরব মজুমদারের শরীরে। ত্রিপুরার উদয়পুর থেকে ঘোড়া দাবড়িয়ে বরদৈন আসার পর তার শরীরে বিষক্রিয়া দেখা দেয়। ঘোড়া থেকে মাটিতে পড়ে গিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। সেখানেই সমাহিত করা হয় তাকে। তা ছাড়া তার স্মৃতির সম্মানে তার বংশধররা সেই ১৭৬০ সালে সেখানে নির্মাণ করেন দুটি সুউচ্চ মিনার (স্থানীয় ভাষায় মঠ), যা এখনও দৃশ্যমান।
১৯৪৭ সালের পর জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হলে পাকিস্তান শাসনামলে এই জমিদারবাড়ি নিষ্প্রাণ হতে থাকে। ভৈরব মজুমদারের চতুর্থ প্রজন্ম অনাথ বন্ধু মজুমদার কুমিল্লা শহরে গিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করেন। তার এক পুত্র শক্তি ভূষণ মজুমদার বর্তমানে বসবাস করেন নগরীর পুরাতন চৌধুরীপাড়ায়। তার একমাত্র পুত্র ভাস্কর মজুমদার প্রতি বছর তার পূর্বপুরুষদের স্মৃতিধন্য বরদৈন মুন্সিবাড়িতে সময় কাটাতে আসেন। ইতিহাসের পাতায় ভৈরব মজুমদারের তেমন স্থান না হলেও লোকমুখে পালা গানে এখনও উচ্চারিত হয় তার নাম। ভৈরব মজুমদারের ষষ্ঠ বংশধর ভাস্কর মজুমদার বলেন, 'স্বাধীনতা যুদ্ধের পর আমাদের বংশের মানুষজন লেখাপড়া ও ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে। এখন আর বাড়িটিতে কেউ বসবাস করে না। বর্তমান প্রজন্ম জানেও না ভৈরব মজুমদার সম্পর্কে।' তিনি বলেন, 'সরকারের উচিত জমিদারবাড়ি এবং মিনারগুলো সংরক্ষণ করা।'
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মঞ্জুরুল হক বলেন, ভৈরব মজুমদারের বাড়িটি সম্পর্কে আপনাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। আমি সরেজমিন বাড়িটির বর্তমান অবস্থা দেখব। সরকারিভাবে বাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণ করা যায় কিনা, তা নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।
স্থানীয় অধিবাসীদের মতে, ভারতের উত্তরপ্রদেশ থেকে ১৬০০ সালে এ দেশে আসেন ভৈরব মজুমদারের পূর্বপুরুষ। মোগল সাম্রাজ্যের সেনাবাহিনীর উত্তরপ্রদেশের একটি ইউনিটের দায়িত্বে ছিলেন তার পিতা রঘুনারায়ণ মজুমদার। পরে তিনি এ অঞ্চলের বিশাল এক মৌজার মালিক হয়ে যান।
১৭৩৯-৪০ সালের কথা। ত্রিপুরার মহারাজা কৃষ্ণ মাণিক্যকে খাজনা দেওয়া বন্ধ করে দেন পাশের অঞ্চল বর্তমান বৃহত্তর নোয়াখালীর জমিদার শমসের গাজী। যাকে তখন সবাই ডাকত 'ভাটির বাঘ' নামে। মহারাজার বাহিনী তখন যুদ্ধে নামে শমসের গাজীর বিরুদ্ধে। আর তার পাশে দাঁড়ান জমিদার ভৈরব মজুমদার নিজের বাহিনী নিয়ে। এ যুদ্ধে পরাজিত হন মহারাজা। কিন্তু পলাশীর যুদ্ধে ব্রিটিশপক্ষ জয়ী হওয়ার পর তাদের সহায়তা নিয়ে আবারও ত্রিপুরার ক্ষমতায় আসেন কৃষ্ণ মাণিক্য। এ সময় কৃষ্ণ মাণিক্যের হাতে বন্দি হন ভৈরব মজুমদার। কিন্তু সুদর্শন ভৈরব মজুমদারের সৌন্দর্যে বিমোহিত রানী রাজাকে অনুরোধ করেন তাকে মুক্ত করে দিতে। রাজা কৃষ্ণ মাণিক্য রানীর কথা রাখেন বটে, কিন্তু মুক্ত করে দেওয়ার আগে বিষ প্রয়োগ করেন ভৈরব মজুমদারের শরীরে। ত্রিপুরার উদয়পুর থেকে ঘোড়া দাবড়িয়ে বরদৈন আসার পর তার শরীরে বিষক্রিয়া দেখা দেয়। ঘোড়া থেকে মাটিতে পড়ে গিয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। সেখানেই সমাহিত করা হয় তাকে। তা ছাড়া তার স্মৃতির সম্মানে তার বংশধররা সেই ১৭৬০ সালে সেখানে নির্মাণ করেন দুটি সুউচ্চ মিনার (স্থানীয় ভাষায় মঠ), যা এখনও দৃশ্যমান।
১৯৪৭ সালের পর জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হলে পাকিস্তান শাসনামলে এই জমিদারবাড়ি নিষ্প্রাণ হতে থাকে। ভৈরব মজুমদারের চতুর্থ প্রজন্ম অনাথ বন্ধু মজুমদার কুমিল্লা শহরে গিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করেন। তার এক পুত্র শক্তি ভূষণ মজুমদার বর্তমানে বসবাস করেন নগরীর পুরাতন চৌধুরীপাড়ায়। তার একমাত্র পুত্র ভাস্কর মজুমদার প্রতি বছর তার পূর্বপুরুষদের স্মৃতিধন্য বরদৈন মুন্সিবাড়িতে সময় কাটাতে আসেন। ইতিহাসের পাতায় ভৈরব মজুমদারের তেমন স্থান না হলেও লোকমুখে পালা গানে এখনও উচ্চারিত হয় তার নাম। ভৈরব মজুমদারের ষষ্ঠ বংশধর ভাস্কর মজুমদার বলেন, 'স্বাধীনতা যুদ্ধের পর আমাদের বংশের মানুষজন লেখাপড়া ও ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে। এখন আর বাড়িটিতে কেউ বসবাস করে না। বর্তমান প্রজন্ম জানেও না ভৈরব মজুমদার সম্পর্কে।' তিনি বলেন, 'সরকারের উচিত জমিদারবাড়ি এবং মিনারগুলো সংরক্ষণ করা।'
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মঞ্জুরুল হক বলেন, ভৈরব মজুমদারের বাড়িটি সম্পর্কে আপনাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। আমি সরেজমিন বাড়িটির বর্তমান অবস্থা দেখব। সরকারিভাবে বাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণ করা যায় কিনা, তা নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।
মন্তব্য করুন