বগুড়ার শেরপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় মো. লুৎফর রহমান (৭০) নামে মাদ্রাসার সাবেক এক অধ্যক্ষ নিহত হয়েছেন। 

লুৎফর রহমান উপজেলার গাড়ীদহ মডেল ইউনিয়নের রামেশ্বরপুর গ্রামের হাছেন আলী প্রামাণিকের ছেলে। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে ও ছোট ভাইও আহত হয়েছেন।

বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

নিহতের স্বজন ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের রামেশ্বরপুর গ্রামে মামুনুর রশিদ ও আব্দুল মান্নানের ১৯ শতক জায়গা রয়েছে। বর্তমানে সেটি বাঁশবাগান ও কবরস্থান হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আর তার পাশের জমিটির মালিক স্থানীয় নগর জেএম সিনিয়র মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ লুৎফর রহমান। বেশ কিছুদিন ধরেই মামুন ও মান্নান তাদের পাশের জমিটি দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি ওই প্রভাষকের প্রায় আট শতক জমি দখল নিয়ে সেখানে বাঁশের বেড়া দেন।

একপর্যায়ে ঘটনাটি জানার পর বুধবার সকালে লুৎফর রহমানের ছোট ভাই পল্লী চিকিৎসক মাহবুবার রহমান ঘটনাস্থলে যান। একইসঙ্গে তার ভাইয়ের জায়গায় অবৈধভাবে দেওয়া বাঁশের বেড়া অপসারণ করেন এবং সেখানে গাছের চারা রোপণ করছিলেন। এই খবর পেয়ে প্রতিপক্ষ মামুন ও মান্নানের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন ব্যক্তি অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে সেখানে উপস্থিত হয়ে মাহবুবকে মারধর করেন। তাকে উদ্ধারে এগিয়ে যান লুৎফর রহমান ও তার ছেলে কাহালু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত চিকিৎসক মশিউল আলম।

এসময় প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান লুৎফর রহমান। পরে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। এরপর আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়।

নিহতের চিকিৎসক ছেলে মশিউল আলম অভিযোগ করে বলেন, কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই প্রতিপক্ষের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বেধড়ক মারপিট শুরু করে। এসময় আমার বৃদ্ধ বাবা মাটিতে লুটিয়ে পড়লে সেখানেও তার মাথায় প্রচণ্ড আঘাত করা হয়। এতে ঘটনাস্থলেই বাবা মারা যান।

এদিকে ঘটনাটি সম্পর্কে বক্তব্য জানতে অভিযুক্ত মামুনুর রশিদ ও আব্দুল মান্নানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ঘটনার পর থেকেই পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

শেরপুর থানার এসআই সাচ্চু বিশ্বাস এ প্রসঙ্গে বলেন, ঘটনার পরপরই লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। সেইসঙ্গে ঘটনায় জড়িতদের ধরতে পুলিশি অভিযান চলছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।