মাত্র ৭ হাজার টাকায় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে চাকরি দেওয়ার কথায় প্রতারণার শিকার হয়েছেন দুই যুবক। তারা হলেন- মেহেদী হাসান বাবু ও রবি দাশ। দু'জনই উচ্চ মাধ্যমিকে আশানুরূপ ফল করতে না পারায় অফিস সহকারী পদে চাকরি করার সিদ্ধান্ত নেন। 

প্রতারকরা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর নকল করে তাদের হাতে তুলে দেয় যোগদানপত্রও। 

বুধবার সকালে ছিল তাদের যোগদানের সময়। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ যোগদানপত্র নিয়ে নতুন চাকরিতে যোগদান করতে বোর্ডে ছুটে আসেন তারা। পরে তাদের যোগদানপত্রসহ আনুষঙ্গিক কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নিশ্চিত হন দু'জনই প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

এ ঘটনার পর বুধবার দুপুরের দিকে প্রথমে থানায় সাধারণ ডায়েরি ও পরে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয় বোর্ড কর্তৃপক্ষ। তবে বিকেলে বোর্ডের কর্মকর্তারাসহ ভুক্তভোগী দুই যুবক নিজেরা বাদী হয়েই থানায় যান মামলা করতে। 

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথ সমকালকে বলেন, বোর্ডে অফিস সহকারী পদে চাকরিতে যোগ দিতে বুধবার সকালে দুই যুবক এসেছেন- এমন খবরে আমরা আঁতকে উঠি। পরে তাদের সঙ্গে কথা বলে ও কাগজপত্রসহ যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত যাচাই করে আমরা নিশ্চিত হই চাকরির নামে দুই যুবক প্রতারণার শিকার হয়েছেন। বিষয়টি জানার পর বোর্ডের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে পাঁচলাইশ থানাকে জানানো হয়। থানার দুই এসআই, বোর্ডের কর্মকর্তা ও ভুক্তভোগী দু'জনকে থানায় পাঠানো হয়। প্রথমে বোর্ড এ ঘটনায় মামলা করতে চেয়েছিল। কিন্তু যেহেতু দুই যুবক প্রতারণার শিকার হয়েছেন, তাই তারাই বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি সমকালকে বলেন, এই প্রতারণার সঙ্গে বোর্ডের কেউ জড়িত নেই। কারণ এখানে মাত্র ৭ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে। চাকরি দেওয়ার নামে কয়েক লাখ টাকার বিনিময় হলে আমরা সেটি সন্দেহ করতাম।

জানা গেছে, ভুক্তভোগী মেহেদী হাসান বাবু ও রবি দাশ বন্ধু। গত ২৩ জুলাই নগরের টাইগারপাস আমবাগান এলাকায় দুই বন্ধুর মধ্যে চাকরি না পাওয়াসহ হতাশার বিষয়ে আলাপকালে সামনে এসে দাঁড়ান আবদুর রাজ্জাক নামে এক লোক। এ সময় তিনি তাদের কথা শুনে সামান্য টাকায় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দেন। এই ফাঁদে পা দিয়ে দুই বন্ধু প্রথমে তাকে ২ হাজার টাকা করে ৪ হাজার টাকা দেন। পরে দ্বিতীয় দফায় ৫ হাজার টাকা করে ১০ হাজার টাকা তুলে দেন আবদুর রাজ্জাকের হাতে। এইচএসসিতে ভালো ফল করতে না পেরে দুই বন্ধু চাকরি করার সিদ্ধান্ত নেন।

ভুক্তভোগীরা জানান, প্রথমে বিশ্বাস না করলেও আবদুর রাজ্জাকের কাছে চাকরির বিজ্ঞপ্তি দেখে টাকা দিয়েছি। আবদুর রাজ্জাকের সহকারী রুহুল আমিন ও তানজিম আহমেদ চৌধুরী নামে দুজন আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। তাদের হাতেই দুই কিস্তিতে আমরা টাকা তুলে দিয়েছি।

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রদীপ চক্রবর্তী জানান, শিক্ষা বোর্ড থেকে অফিস সহকারী পদে চাকরি দেওয়ার ব্যাপারে কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি। প্রতারকরা আমার স্বাক্ষর নকল করে দুই যুবককে নকল যোগদানপত্র দিয়েছে।