- সারাদেশ
- শ্রীমঙ্গলে রেলের ভূমি উদ্ধার অভিযানকালে এক্সিভেটরে আগুন
শ্রীমঙ্গলে রেলের ভূমি উদ্ধার অভিযানকালে এক্সিভেটরে আগুন

শ্রীমঙ্গল শহরের ভানুগাছ রোড এলাকায় এক্সিভেটরের আগুন নিয়ন্ত্রণ করছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে রেলের বেহাত জমি পুন:উদ্ধারে অভিযান পরিচালনাকালে একটি এক্সিভেটরে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শহরের ভানুগাছ সড়কে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে এক্সেভেটরের আগুন নিভিয়ে ফেলে। এ ঘটনায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আটক ওই ব্যক্তির নাম সোলেমান মিয়া (৩৫)। তিনি শ্রীমঙ্গল শহরের ক্যাথলিক মিশন রোডের লোকমান মিয়ার ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ভানুগাছ সড়কের উত্তর পাশের রেলের ২৮৭ শতক জমির উপর বিভিন্ন স্থাপনা উচ্ছেদ করার পরিকল্পনা ছিল রেল বিভাগের। সেই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সেখানে একটি এক্সিভেটর আনা হয়। এক্সিভেটরটি রেলগেট পয়েন্টে আসা মাত্র কয়েকজন দুর্বৃত্ত যন্ত্রটির কেবিনে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায়। আগুনে যন্ত্রটির চালকের কেবিন ও নীচের অংশ সম্পূর্ণ পুড়ে হয়।
বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল জোনের সহকারী এস্টেট অফিসার আতিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আজ ওই এলাকার রেলের প্রায় ২৮৭ শতক জায়গা উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযানের প্রস্তুতি ছিল। অভিযানের কাজের জন্য এক্সিভেটর যন্ত্রটি একটি যানবাহনে করে সেখানে নেয়া হয়েছে। আগুন লাগানোর ঘটনায় তিনি বলেন, রেলের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সেখানে পাঠানো হচ্ছে। তিনি এবিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, রেলওয়ের দখল করা জায়গা উদ্ধার করতে এখানে এসেছিলাম। কিন্তু আসার পর জানতে পারেন এই জায়গা নিয়ে কেউ মামলা করেছে আদালতে, সেই কাগজপত্র আমরা দেখেছি। কিন্তু অভিযানের আগে মামলার কোন কাগজপত্র, ডকুমেন্টস তারা উপস্থাপন করেনি। এই কাগজ দেখানোর আগেই, উচ্ছেদ এর জন্য আনা এক্সেভেটরে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই ব্যাপারে রেল বিভাগ আইনগত ব্যবস্থা নেবে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করা হবে।
ইউএনও বলেন, যারা এই জমি নিয়ে মামলা করেছে তারা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে কাগজপত্র নিয়ে আসলে সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হবে। তারপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আপাতত আদালতের প্রতি সম্মান দেখিয়ে উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ দীর্ঘ ৩৮ বছর পর ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর রেলের শতকোটি টাকার এই ভূমি উদ্ধার অভিযান চালায় রেল বিভাগ। শতাধিক আইনশৃংখলা বাহিনীর সহায়তায় দুইটি বুলডোজার দিয়ে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে। এতে শহরের প্রভাবশালীদের দখলে থাকা ভানুগাছ সড়কের মুক্তিযোদ্ধা কৃষি নার্সারি প্রকল্প, অভিজাত রেস্টুরেন্ট, গ্যাস সিলিন্ডারের গুদাম, ফার্নিচারের শোরূম, সেলুন, চা পাতার দোকান, বাসা বাড়ি, ভ্যারাইটি ষ্টোর, ফার্মেসি, হার্ডওয়্যারের দোকান, ওয়ার্কসপ, ট্রান্সপোর্ট অফিসসহ শতাধিক পাকা স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়া হয়।
এরপর রেল বিভাগের দেখভালের অভাবে এই জমিগুলো আবারো দখল করে স্থাপনা নির্মাণ শুরু করে দখলদাররা।
মন্তব্য করুন