সোনাগাজীর আলোচিত মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকাণ্ডে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আওয়ামী লীগ নেতাকে নির্দোষ দাবি করলেন দলের স্থানীয় দুই প্রভাবশালী নেতা। তবে ওই হত্যাকাণ্ডের পর এই নেতারাই তাদের বিচারের পক্ষে সোচ্চার ছিলেন। এখন অবস্থান পরিবর্তন করে তাদের দেওয়া বক্তব্যের দুটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

নুসরাত হত্যাকাণ্ডে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন ও পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মকসুদ আলমকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। কিন্তু তাদের নির্দোষ দাবি করেছেন ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকন। সোনাগাজী পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের পৃথক মতবিনিময় সভায় তারা এ দাবি করেন।

তবে ২০১৯ সালের এপ্রিলে সোনাগাজী ফাজিল মাদ্রাসায় নুসরাতকে আগুন দিয়ে হত্যার পর থেকে জহির ও রফিকুল অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে স্বোচ্চার ছিলেন। হঠাৎ তাদের অবস্থান পরিবর্তনে দলীয় নেতাকর্মী ও জনসাধারণের মাঝে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, পৌর নির্বাচনে বৈতরণী পার হতে রুহুল আমিন ও মকসুদ আলমের সমর্থকদের ভোট পেতে তারা তাদের আগের অবস্থান পরিবর্তন করে সাফাই গেয়েছেন।

গত সোমবার সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসায় নির্বাচনী মতবিনিময় সভায় জহির উদ্দিন লিপটন বলেন, 'যে মাদ্রাসায় দাঁড়িয়ে আমরা কথা বলছি এখানকার একটি ঘটনা আমাদের কপালে কলঙ্কের তিলক এঁকে দিয়েছে। আমাদের দুইজন ভাই, আমাদের দুইজন নেতা বিনা দোষে কারাভোগ করছেন।' এ সময় মুহুর্মুহু স্লোগান দিয়ে তার বক্তব্যের প্রতি সমর্থন জানান উপস্থিত নেতাকর্মীরা।

অন্যদিকে বুধবার সকালে মহিলা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী সভায় পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, 'আমি চেয়েছি প্রিন্সিপাল সিরাজউদ্দৌলার বিচার হোক। কিন্তু মকসুদ ভাই নির্দোষ, তিনি এমন কোনো অপরাধ করেননি যার জন্য তার ফাঁসি হবে। আমি তার মুক্তির জন্য প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করব এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে যাব।'

২০১৯ সালের ২৪ অক্টোবর নুসরাত হত্যা মামলার রায়ে প্রধান আসামি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাসহ ১৬ আসামির সবাইকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে দু'জন আওয়ামী লীগ নেতাও রয়েছেন।