- সারাদেশ
- বিকল্প নির্মাণের পর চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংস্কারের সিদ্ধান্ত
বিকল্প নির্মাণের পর চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংস্কারের সিদ্ধান্ত

চট্টগ্রামে বিকল্প শহীদ মিনার নির্মাণের পর বিদ্যমান শহীদ মিনার সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রোববার চট্টগ্রামের নির্মাণাধীন মুসলিম ইনস্টিটিউট হলে এক মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে শহীদ মিনার ‘সরানো’ নিয়ে তৈরি হওয়া জটিলতার নিরসন হয়েছে।
রোববারের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে একটি বিকল্প শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে।
বিদ্যমান কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার আধুনিকায়নের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি বিকল্প শহীদ মিনার চত্বরে পালন করা হবে।
সভায় বলা হয়েছে, আগামী ১ নভেম্বর থেকে বিদ্যমান শহীদ মিনারের সংস্কার কাজ শুরু হবে। নয় মাসের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘বিদ্যমান কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মূল নকশা ও অবয়ব ঠিক রেখে সংস্কার এবং পূণর্বিন্যাস করতে হবে। আগামী নয় মাসের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে। সংস্কারকাজ চলাকালীন জাতীয় দিবসের কর্মসূচি পালন যাতে ব্যাহত না হয় সেজন্য মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে একটি বিকল্প শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’
গণপূর্ত চট্টগ্রাম জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ওম প্রকাশ নন্দী সমকালকে বলেন, ‘শহীদ মিনারের সংস্কার নিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়ায় সিটি মেয়রের মধ্যস্ততায় মুক্তিযোদ্ধা, সংস্কৃতিকর্মী, রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সঙ্গে মতামত নেওয়া হয়। তাদের দাবি অনুযায়ী, আগামী ১৫ অক্টোবর থেকে বিকল্প শহীদ মিনার নির্মাণ কাজ শুরু হবে। যেটির কাজ এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে শেষ হবে। এটি পরবর্তীতে স্কুল কর্তৃপক্ষ স্থায়ীভাবে ব্যবহার করবে। এছাড়া বিদ্যমান শহীদ মিনারের অধিকতর উন্নয়নের কাজ ১ নভেম্বর শুরু করা হবে। আগামী ছয় থেকে নয় মাসের মধ্যে কাজ শেষ করা হবে।’
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আহমেদ ইকবাল হায়দার সমকালকে বলেন, ‘শহীদ মিনার সরানো হচ্ছে না। এখন যেখানে আছে সেখানেই আরও উঁচু বেদিতে শহীদ মিনার পুনর্বিন্যাস করা হবে। বিষয়টি স্পষ্ট হওয়ার পর ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে। বিদ্যমান শহীদ মিনারের সংস্কার কাজ চলাকালে বিকল্প একটি শহীদ মিনার নির্মাণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সেটি তারা নির্মাণে সম্মত হয়েছেন।’
প্রস্তাবনা অনুযায়ী, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার অংশে সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স প্রকল্পের আওতায় ২৫০ জন ধারণক্ষমতার একটি উন্মুক্ত গ্যালারিসহ মুক্তমঞ্চ এবং পশ্চিম পাশে নিচতলায় ক্যাফে ও দুই তলায় মিউজিয়াম হবে। মাঝের অংশে শহীদ মিনার থাকবে।
সড়কের দুই পাশে সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্সের দুই অংশের মধ্যে সংযোগ ঘটাতে রাস্তার ২১ ফুট উপর দিয়ে একটি প্লাজা নির্মাণ করা হবে। এই প্লাজা দিয়ে হেঁটে কমপ্লেক্সের উভয় অংশে চলাচল করা যাবে।
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন গণপূর্ত চট্টগ্রাম জোনের অতিরিক্ত প্রকৌশলী ওম প্রকাশ নন্দী। মতবিনিময়ে অংশ নেন মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান, নাট্য ব্যক্তিত্ব আহমেদ ইকবাল হায়দার, কবি অভীক ওসমান, সংরক্ষিত কাউন্সিলর রুমকী সেনগুপ্ত, সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য মহিউদ্দিন শাহ আলম নিপু, শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বাবু, সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির, দেওয়ান মাকসুদ আহমেদ, আব্দুল হালিম দোভাষ, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার মো. শহীদুল হক চৌধুরী, নাট্য ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক সঞ্জীব বড়ুয়াসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন