মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজ্জাম্মেল হক বলেছেন, 'বন্দর নগরী চট্টগ্রামে বীরমুক্তিযোদ্ধাদের এমন অনেক স্মৃতিবিজড়িত স্থান রয়েছে, যেগুলো এখনও সংরক্ষণ করা হয়নি। কুচক্রীমহল যাতে ইতিহাসকে বিকৃত করতে না পারে, সেজন্য এসব স্থান সংরক্ষণ করা হবে।'

বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরের উত্তর কাট্টলী এলাকায় মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ও জাদুঘর নির্মাণের প্রস্তাবিত স্থান পরিদর্শন শেষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী আ ক ম মোজ্জাম্মেল হক আরও বলেন, 'এখানে একটি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ নির্মাণের মহাপরিকল্পনা চলছে। স্মৃতিসৌধ নির্মাণের জন্য যে জায়গাটি বাছাই করা হয়েছে, সেটি চমৎকার একটি জায়গা। এটি দেখে আমি অভিভূত। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে পুরো এলাকার চেহারা পাল্টে যাবে। এর মাধ্যমে এ অঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়ন হবে; বাড়বে গুরুত্বও। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে এটি নিউইয়র্কের স্ট্যাচু অব লিবার্টির মতো গুরুত্ব পাবে।' 

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের মুখ্য সচিবও স্থানটি পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তরিকতার সঙ্গে সম্মতিও দিয়েছেন। আমরা শিগগিরই এটি করবো। চট্টগ্রামবাসীর ইচ্ছা, স্বপ্ন, আকাঙ্খা আমরা যাতে পূরণ করতে পারি সেজন্য সবাই দোয়া করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করবেন। যাতে এ দেশ আরও এগিয়ে যেতে পারে।' 

এ সময় মন্ত্রী বলেন, 'ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংরক্ষণ করতে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ চললেও, যেখান থেকে মানুষ স্বাধীনতার ঘোষণা শুনতে পেয়েছিল, সেই চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রের বিষয়ে কোনো পরিকল্পনা নেই।'

অনুষ্ঠানে প্রজেক্টরের মাধ্যমে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নাজমুল আহসান।

অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, 'বীরমুক্তিযোদ্ধারা দেশের অতন্দ্র প্রহরী। আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো এখনও পাকিস্তানি প্রেতাত্মারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা ধর্মের নামে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজা মণ্ডপে পবিত্র কোরআন রেখে তারা দেশে অশান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে।' 

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- বীরমুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের এমডি এম ইদ্রিস সিদ্দিকী, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া, চট্টগ্রাম মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহমেদ প্রমুখ।