সিলেটে কলেজছাত্র আরিফুল ইসলাম রাহাত হত্যা মামলার প্রধান আসামি সামসুদ্দোহা সাদী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে মহানগর হাকিম-২য় সুমন ভুইয়ার আদালতে ১৬৪ ধারায় সাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। এরপর আদালত আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বলে জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক রিপন দে। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সকালে দক্ষিণ সুরমার হাজীপুর এলাকার ডোবা জমি থেকে রাহাত হত্যাকাণ্ডে ব্যবহূত বাঁটসহ সাড়ে ৭ ইঞ্চি লম্বা ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।

এদিন সকাল ১০টায় নগরীর আগপাড়ায় সিলেট মেট্রো ও জেলা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা। তিনি বলেন, 'ভাইয়া' বলে সম্বোধন না করায় রাহাতকে ভয়ভীতি দেখানোর জন্য মূলত সাদী তাকে ছুরি দিয়ে স্ট্যাপিং করে। গত ২১ অক্টোবর দুপুরে দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে মোটরসাইকেলে এসে রাহাতকে ছুরিকাঘাত করে সাদী। এ সময় তানভীর মোটরসাইকেল চালাচ্ছিল এবং অপর আসামি ক্যাম্পাসে নজরদারি করছিল বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

সিআইডি কর্মকর্তা সুজ্ঞান চাকমা বলেন, রাহাতকে স্ট্যাপিং করে আসামিরা হাজীপুর-জালালপুর এলাকার একটি দোকানে বসে চা পান করছিল। এ সময় সাংবাদিক পরিচয়ে একজন সাদীকে মোবাইল ফোনে জানতে চান, তুমি নাকি রাহাতকে খুন করেছো? তখন তারা প্রথমবারের মতো রাহাতের মৃত্যুর কথা জানতে পারে বলে সিআইডিকে জানিয়েছে সাদী। এ খবর পেয়ে মোটরসাইকেলে করে তারা মৌলভীবাজারের শেরপুর পর্যন্ত যায়। সেখান থেকে সাদী বাসে উঠে প্রথমে ঢাকার মিরপুরে এক আত্মীয়ের বাসায় যায়। সেখান থেকে কুষ্টিয়ায় গিয়ে আত্মগোপন করেছিল খুনি সাদী।

গত মঙ্গলবার রাতে কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের দুর্গম চর এলাকা থেকে সিআইডি তাকে গ্রেপ্তার করে। বুধবার ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে সিআইডি জানিয়েছিল, সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বে দক্ষিণ সুরমা সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র রাহাতকে ছুরিকাঘাতে খুন করে সাদী। কুষ্টিয়া থেকে সাদী ভারতে পালিয়ে যেতে চেয়েছিল বলেও জানিয়েছিল সিআইডি। তবে সিলেটে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা জানান, অনেকে বলছেন সে ভারতে পালানোর চেষ্টা করেছিল।

গত ২২ অক্টোবর নিহতের চাচা শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে সাদীকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন। মহানগর পুলিশের দক্ষিণ সুরমা থানায় দায়ের করা মামলায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৫-৭ জনকে আসামি করা হয়। পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে বুধবার মামলার তদন্তের দায়িত্ব থানা পুলিশের কাছ থেকে সিআইডিতে স্থানান্তর করা হয়। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের পর থেকে সিআইডি ছায়া তদন্ত করে মূল আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হয়।