স্ত্রীকে তালাকা দিয়ে তাকে আবার বিয়ে করতে মরিয়া নুরুল আমিন। কিন্তু জান্নাতুল এই সময়ে আরেকজনের সঙ্গে প্রেম করে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখছেন। এতে যত ক্ষোভ প্রেমিক সজীবের ওপর। তিনিই প্রধান বাধা। সেই ক্ষোভ থেকেই অবশেষে তাকে হত্যা করেন সাবেক স্বামী নুরুল আমিন।

রোববার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে নুরুল আমিনসহ দুই আসামিই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। গ্রেপ্তার অপর আসামি হলেন, তার সহযোগী মো. শাহজাহান।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ইন্সপেক্টর সন্তোষ কুমার চাকমা জানান, গত ২৭ অক্টোবর নগরীর পাহাড়তলী থানায় কৃষি জমি থেকে অজ্ঞাতপরিচয়ের একটি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মরদেহটি মো. সজিব নামে একজনের বলে শনাক্ত করে পিবিআই।

সজীবের ভাই মো. ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয়ের আসামিদের বিরুদ্ধে পাহাড়তলী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর পিবিআই হবিগঞ্জ ও চট্টগ্রামের আকবরশাহ এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই দুইজনকে গ্রেপ্তার করে। এসময় নিহত সজীবের মোবাইল ফোনটিও তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয়।

রোববার তারা খুনের ঘটনা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে নুরুল আমিন জানান, করোনার লকডাউনের সময় আর্থিক অনটনে তারা স্বামী-স্ত্রী আমিন ও জান্নাতুল হবিগঞ্জের নিজ গ্রামে ফিরে যান। পারিবারিক বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হত। একপর্যায়ে মারধর করলে জান্নাতুল রাগ করে চট্টগ্রামে আসার জন্য বেরিয়ে পড়েন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশ্বরোড এলাকায় এসে তিনি একা হয়ে পড়েন। কোনো উপায় না পেয়ে একটি পিকআপে করে চট্টগ্রাম শহরে আসেন। এতে পিকআপ চালক সজীবের সঙ্গে তার পরিচয় ঘটে। পরিচয়ের সুবাধে প্রায়ই তারা ফোনে কথা বলতেন। এরমধ্যে স্বামীর সঙ্গে তালাকও হয়ে যায় তার।

কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই নরুল আমিন জান্নাতুলকে ফের বিয়ে করতে মরিয়া হয়ে উঠেন। সজীবের সঙ্গে প্রেম তিনি মেনে নিতে পারছিলেন না। এরপরই ‘পথের কাটা’ সজীবকে সরিয়ে দিতে পরিকল্পনা করেন। পাঁচ হাজার টাকায় ভাড়া করেন শাহজাহানকে। তারা কাজী অফিসে যাওয়ার কথা বলে সজীবকে কাট্টলী টোল রোডের একটি কৃষি জমিতে নিয়ে যান। সেখানে একটি স্যান্ডো গেঞ্জি তার গলায় পেঁচিয়ে নাক-মুখ চেপে ধরে হত্যা করেন আমিন ও শাহজাহান।

সজীব পেশায় একজন পিকআপ চালক ছিলেন। আর গ্রেপ্তার নুরুল আমিন পেশায় একজন টাইলস শ্রমিক। তার সাবেক স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস একজন গার্মেন্টস কর্মী।