- সারাদেশ
- গাজীপুরের কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে
গাজীপুরের কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে

আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা, ছবি: সমকাল
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ এলাকার কেমিক্যাল কারখানার আগুন অবশেষে নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফায়ার সার্ভিসের নয়টি ইউনিটের প্রায় পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। তবে এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বা হতাহতের খবর এখনও জানা যায়নি।
ফায়ার সার্ভিসের ডেপুটি ডিরেক্টর দিল মনি শর্মা জানান, রাত সাড়ে ১২টার দিকে কারখানাটির আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। এর আগে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আজিজ গ্রুপের এএসএম কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজে ভয়াবহ আগুন লাগে।
কারখানায় ভয়াবহ আগুনের খবর পেয়ে গাজীপুর ও শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিসের নয়টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। কিন্তু রাত প্রায় সাড়ে ১০টা পর্যন্ত আগুনের তীব্রতা বাড়তেই থাকে বলে জানান গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
এলাকাবাসী, কারখানা কর্তৃপক্ষ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানান, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কারখানার টিনশেড ঘরের ব্লিচিং পাউডার রাখার স্থান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে আগুন দ্রুত কারখানার ভেতরে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর আগুন কারখানার ভেতরে রাখা কেমিক্যাল ড্রামে ছড়িয়ে পড়ে। তখন কারখানার ভেতরে বিকট শব্দ হতে থাকে। আশপাশে আগুনের শিখা দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে।
খবর পেয়ে প্রথমে শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে যান। পরে গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের আরও ছয়টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা শুরু করেন। আশপাশের উৎসুক জনতা ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড দেখার জন্য সেখানে গিয়ে অবস্থান নেয়। তবে এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সময় কারখানাটি ছুটি ছিল বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জানিয়েছেন।
বিকট শব্দের সঙ্গে বিভিন্ন মেশিনারীজ যন্ত্রাংশের ক্ষুদ্রাংশ আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। কারখানায় আগুনের তীব্রতা ও যন্ত্রাংশ ছড়িয়ে পড়ায় আশপাশের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের দোকানপাঠ বন্ধ করে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে শ্রীপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিরাপত্তা জোড়দার করে।
কারখানার শ্রমিক সাদ্দাম ও রফিকুল ইসলাম জানান, কেমিক্যাল কারখানাটির ভেতরে বিভিন্ন রাসায়নিক প্রক্রিয়াকরণ যন্ত্র ছিল। এছাড়া রাসায়নিক পদার্থগুলো সেখানেই মজুদ করা হয়ে থাকে, যেখানে আগুন লাগে। শ্রমিকদের ধারণা বয়লার বিস্ফোরণে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে।
কারখানাটির সিনিয়র ব্যবস্থাপক (এডমিন) রেজাউল করিম জানান, কারখানায় দুপুর দুইটা থেকে রাত ১০টার শিফটের কাজ চলছিল। এসময় ৫৫ থেকে ৫৬ জন শ্রমিক বিভিন্ন প্ল্যান্টে দায়িত্বরত অবস্থায় ছিলেন। আগুনের সূত্রপাত দেখে তারা নিরাপদে দ্রুত সরে আসেন। এখনও কারও নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আব্দুল হামিদ মিয়া জানান, কারখানায় আগুন লাগার পরপরই প্রথমে শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট এসে কাজ শুরু করে। পরে ভালুকা, জয়দেবপুরসহ কয়েকটি এলাকা থেকে আরও ছয়টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে যুক্ত হয়। রাত ১২ পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছিলেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
এর আগে চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারিও এই কেমিক্যাল কারখানায় ভয়াবহ আগুন লেগে তিনজন নিহত হন এবং কমপক্ষে ১০ জন আহত হন।
মন্তব্য করুন