
অসহায় মানুষের পাতে খাবার তুলে দিচ্ছেন আজিজুল আলম বেন্টুর লোকজন সমকাল
প্রতিদিনই শতাধিক দুস্থ মানুষ রাতের খাবার খেতে যান সেখানে। পেট ভরে খেয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে যান। রাতের ঘুম পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে এসব ছিন্নমূল পথশিশু ও নিম্ন আয়ের মানুষের। রাজশাহী মহানগরের সাগরপাড়ায় তাদের জন্য এই মেহমানখানা খুলেছেন আজিজুল আলম বেন্টু। তার এই ব্যতিক্রমী ও মহতী উদ্যোগ এরই মধ্যে সাড়া জাগিয়েছে সারাশহরে।
পেশাগত জীবনে একজন ব্যবসায়ী আজিজুল আলম বেন্টু। তবে রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় নাম লিখিয়েছেন প্রায় দেড় মাস আগে। সবাই যেখানে রেস্টুরেন্ট খুলে লাভ-লোকসানের হিসাব করতে ব্যস্ত থাকেন, তিনি সেখানে একেবারেই অন্যরকম। রেস্টুরেন্টের অতিরিক্ত বা বেঁচে যাওয়া খাবারদাবার নয়- বিশেষভাবে রান্না করা খাবার দিয়েই মেহমানদারি করেন তিনি অভুক্তদের। ভাত, মাছ, মাংস, ডিম, শাকসবজি- এসব থাকে খাদ্যের তালিকায়। হোটেলের কর্মচারীরাও খান একই হাঁড়িপাতিলের খাবারদাবার।
আজিজুল আলম বেন্টু জানান, রাত ৯টার পর রেস্টুরেন্টে ব্যবসার চাপ কমতে থাকে। তখন শুরু হয় মেহমানদারির রান্নাবান্না। সাদা ভাতের সঙ্গে কোনো দিন মাছ, কোনো দিন মাংস আর ডিম দেওয়া হয়। সবজি থাকে প্রতিদিনই। রাত ১০টা বাজার পরপরই রেস্টুরেন্টের সামনে ভিড় জমাতে থাকেন অভুক্ত মানুষ। ঘড়ির কাঁটা ১১টার ঘরে পৌঁছতেই শুরু হয়ে যায় খাওয়াদাওয়া। কর্মচারীদের পাশাপাশি বেন্টু নিজেই এর তদারকি করেন।
গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় নগরীর সাগরপাড়ায় আজিজুল আলম বেন্টুর 'লবঙ্গ' চায়নিজ রেস্টুরেন্টের সামনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে আসছেন হতদরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ। রিকশাচালকরা রিকশা রেখে বসে পড়ছেন বিছানো শামিয়ানায়।
দেখা গেল, কয়েকজন পথশিশুও এসেছে। তাদের একজন ক্র্যাচে ভর করে এসে বসল বেন্টুর মেহমানখানায়। নাম তার রাজিয়া (১৩)। একটি পা নেই। রাজিয়া জানাল, তার বাড়ি দিনাজপুরে। মা-বাবা দু'জনই মারা গেছে। দিনাজপুরে তার নানি ভিক্ষা করাত তাকে দিয়ে। টাকা কম হলে চলত নির্যাতন। রাগ করে রাজিয়া ট্রেনে চেপে চলে এসেছে রাজশাহী স্টেশনে। সেখানে সারাদিন বেলুন বিক্রি করে রাতে ঘুম দেয় সে। আয় না হলে অনেক রাত না খেয়েই ঘুমাতে হয় তাকে স্টেশনেই। প্রায় রাতই তার খাওয়া হতো না। তবে গত এক মাস ধরে বেন্টুর মেহমানখানায় রাতের খাবার খায় রাজিয়া। তার ভাষায়, 'পেট ভরে খাওয়া যায়। খুবই ভালো খাবার খাওয়ানো হয়। মাছ, মাংস, ডিম, সবজি খাওয়া যায় ভাতের সঙ্গে।'
রিকশাচালক শাহজালাল ও পিন্টু বলেন, রিকশা চালিয়ে যাওয়ার সময় একদিন দেখি, খাওয়া হচ্ছে। এরপর থেকে আমিও নিয়মিত আসি। পেট ভরে, মন ভরে খাচ্ছি- এটা খুবই ভালো লাগে।
লুৎফর রহমান নামের এক দোকান কর্মচারী বলেন, 'করোনার পর থেকে আয় নেই। সংসার চালানো অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই প্রতিদিন রাতে এখানে খেয়ে বাড়িতে ফিরি। অন্তত একবেলার খাবার খরচ তো লাগে না। সামর্থ্যবান সবাই যদি এভাবে এগিয়ে আসত তাহলে আমাদের মতো গরিব মানুষের কষ্ট কমে যেত।'
মেহমানখানার উদ্যোক্তা আজিজুল আলম বেন্টু রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকও। তিনি বলেন, 'জীবনে অনেক ব্যবসা করেছি। এখন আর লাভ নিয়ে চিন্তা করি না। দরিদ্র মানুষকে এক বেলা যেন খাওয়াতে পারি, সে জন্যই রেস্টুরেন্ট করেছি। রেস্টুরেন্টে বাবুর্চি আছে, কর্মী আছে। তারাই রান্না করে। শুধু আলাদা করে বাজার করাতে হয়। এতে আমার ভর্তুকি দিতে হয় প্রতিদিনই। তবে লক্ষ্য যেহেতু মানুষের জন্য কিছু করা- তাই ভর্তুকি কোনো বিষয় নয়। করোনায় অনেক মানুষের আয় কমেছে। অনেকেই খাবারের কষ্টে আছেন। এ উদ্যোগ এরকম সব হতদরিদ্র মানুষকে সামনে রেখে। জীবনে যতদিন সাধ্য থাকবে, ততদিন এ মেহমানদারি চলবে।' তিনি আরও বলেন, সব সামর্থ্যবান যদি নিজ নিজ অবস্থান থেকে এভাবে এগিয়ে আসেন, তবে অনেক মানুষেরই কষ্ট কমবে।
পেশাগত জীবনে একজন ব্যবসায়ী আজিজুল আলম বেন্টু। তবে রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় নাম লিখিয়েছেন প্রায় দেড় মাস আগে। সবাই যেখানে রেস্টুরেন্ট খুলে লাভ-লোকসানের হিসাব করতে ব্যস্ত থাকেন, তিনি সেখানে একেবারেই অন্যরকম। রেস্টুরেন্টের অতিরিক্ত বা বেঁচে যাওয়া খাবারদাবার নয়- বিশেষভাবে রান্না করা খাবার দিয়েই মেহমানদারি করেন তিনি অভুক্তদের। ভাত, মাছ, মাংস, ডিম, শাকসবজি- এসব থাকে খাদ্যের তালিকায়। হোটেলের কর্মচারীরাও খান একই হাঁড়িপাতিলের খাবারদাবার।
আজিজুল আলম বেন্টু জানান, রাত ৯টার পর রেস্টুরেন্টে ব্যবসার চাপ কমতে থাকে। তখন শুরু হয় মেহমানদারির রান্নাবান্না। সাদা ভাতের সঙ্গে কোনো দিন মাছ, কোনো দিন মাংস আর ডিম দেওয়া হয়। সবজি থাকে প্রতিদিনই। রাত ১০টা বাজার পরপরই রেস্টুরেন্টের সামনে ভিড় জমাতে থাকেন অভুক্ত মানুষ। ঘড়ির কাঁটা ১১টার ঘরে পৌঁছতেই শুরু হয়ে যায় খাওয়াদাওয়া। কর্মচারীদের পাশাপাশি বেন্টু নিজেই এর তদারকি করেন।
গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় নগরীর সাগরপাড়ায় আজিজুল আলম বেন্টুর 'লবঙ্গ' চায়নিজ রেস্টুরেন্টের সামনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে আসছেন হতদরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ। রিকশাচালকরা রিকশা রেখে বসে পড়ছেন বিছানো শামিয়ানায়।
দেখা গেল, কয়েকজন পথশিশুও এসেছে। তাদের একজন ক্র্যাচে ভর করে এসে বসল বেন্টুর মেহমানখানায়। নাম তার রাজিয়া (১৩)। একটি পা নেই। রাজিয়া জানাল, তার বাড়ি দিনাজপুরে। মা-বাবা দু'জনই মারা গেছে। দিনাজপুরে তার নানি ভিক্ষা করাত তাকে দিয়ে। টাকা কম হলে চলত নির্যাতন। রাগ করে রাজিয়া ট্রেনে চেপে চলে এসেছে রাজশাহী স্টেশনে। সেখানে সারাদিন বেলুন বিক্রি করে রাতে ঘুম দেয় সে। আয় না হলে অনেক রাত না খেয়েই ঘুমাতে হয় তাকে স্টেশনেই। প্রায় রাতই তার খাওয়া হতো না। তবে গত এক মাস ধরে বেন্টুর মেহমানখানায় রাতের খাবার খায় রাজিয়া। তার ভাষায়, 'পেট ভরে খাওয়া যায়। খুবই ভালো খাবার খাওয়ানো হয়। মাছ, মাংস, ডিম, সবজি খাওয়া যায় ভাতের সঙ্গে।'
রিকশাচালক শাহজালাল ও পিন্টু বলেন, রিকশা চালিয়ে যাওয়ার সময় একদিন দেখি, খাওয়া হচ্ছে। এরপর থেকে আমিও নিয়মিত আসি। পেট ভরে, মন ভরে খাচ্ছি- এটা খুবই ভালো লাগে।
লুৎফর রহমান নামের এক দোকান কর্মচারী বলেন, 'করোনার পর থেকে আয় নেই। সংসার চালানো অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই প্রতিদিন রাতে এখানে খেয়ে বাড়িতে ফিরি। অন্তত একবেলার খাবার খরচ তো লাগে না। সামর্থ্যবান সবাই যদি এভাবে এগিয়ে আসত তাহলে আমাদের মতো গরিব মানুষের কষ্ট কমে যেত।'
মেহমানখানার উদ্যোক্তা আজিজুল আলম বেন্টু রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকও। তিনি বলেন, 'জীবনে অনেক ব্যবসা করেছি। এখন আর লাভ নিয়ে চিন্তা করি না। দরিদ্র মানুষকে এক বেলা যেন খাওয়াতে পারি, সে জন্যই রেস্টুরেন্ট করেছি। রেস্টুরেন্টে বাবুর্চি আছে, কর্মী আছে। তারাই রান্না করে। শুধু আলাদা করে বাজার করাতে হয়। এতে আমার ভর্তুকি দিতে হয় প্রতিদিনই। তবে লক্ষ্য যেহেতু মানুষের জন্য কিছু করা- তাই ভর্তুকি কোনো বিষয় নয়। করোনায় অনেক মানুষের আয় কমেছে। অনেকেই খাবারের কষ্টে আছেন। এ উদ্যোগ এরকম সব হতদরিদ্র মানুষকে সামনে রেখে। জীবনে যতদিন সাধ্য থাকবে, ততদিন এ মেহমানদারি চলবে।' তিনি আরও বলেন, সব সামর্থ্যবান যদি নিজ নিজ অবস্থান থেকে এভাবে এগিয়ে আসেন, তবে অনেক মানুষেরই কষ্ট কমবে।
মন্তব্য করুন