- সারাদেশ
- চলনবিলের আদিবাসী পল্লিতে সহরাই উৎসব
চলনবিলের আদিবাসী পল্লিতে সহরাই উৎসব

সহরাই উৎসবে নেচে-গেয়ে আনন্দ করেন আদিবাসী তরুণীরা- সমকাল
চলনবিলের আদিবাসী পল্লিতে বর্ণাঢ্য ও বৈচিত্র্যময় নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী সহরাই বা গোয়ালপূজা। মূলত শক্তির আরাধনার পাশাপাশি গবাদি পশুর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনই এ উৎসবের মূল উদ্দেশ্য। গোয়াল দেবতা আদিবাসীদের কাছে সুখ, সমৃদ্ধি আর শক্তির দেবতা হিসেবে আরাধ্য হয়ে আসছেন। প্রতি বছর কার্তিক মাসের অমাবস্যার সন্ধ্যা থেকে পরবর্তী তিন দিন সাঁওতাল, কুর্মি, লোধা, মাহাতোসহ বিভিন্ন আদিবাসী গোষ্ঠী এ উৎসবে মেতে ওঠে।
রায়গঞ্জ উপজেলার পশ্চিম আটঘরিয়া গ্রামের বাসিন্দা উজ্জ্বল মাহাতো জানান, চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া, পাবনার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া ও নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার অন্তত ৪৫-৪৮টি গ্রামের আদিবাসী সম্প্রদায় এ উৎসব পালন করে। তবে মাহাতো সম্প্রদায়ের লোকজন তাদের ধর্মীয় উৎসব হিসেবে সহরাই পালন করে। এরই মধ্যে চলনবিলের আদিবাসী পল্লিতে চলছে উৎসবের আমেজ।
নিপেন মাহাতো, পুষ্প রানী মাহাতো ও অসীম মাহাতো জানান, সহরাই উৎসবে হেমন্তকালে কঠিন মাটিকে চাষযোগ্য করার জন্য ধর্মীয়ভাবে তারা গবাদি পশুর যত্ন নিয়ে থাকেন। উৎসব ঘিরে আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামগুলোর প্রতিটি বাড়ির উঠান, দরজা, গোয়াল ঘরে লেপ দেওয়া হয়েছে। চালের গুঁড়া দিয়ে নারীরা এঁকেছেন আল্পনা। এ ছাড়া শুক্রবার গবাদি পশুকে গোসল করানো, সিঁদুর ও তেল দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই চাষাবাদে ব্যবহূত লাঙ্গল, জোয়াল, মইসহ কৃষি যন্ত্রপাতি পরিস্কার করে সিঁদুরে রাঙানো হয়েছে। গুল্টা, গুড়পিপুল, নিমগাছী, সরাতলা, মাধাইনগর, দত্তবাড়ী, কালীবাড়ী, খৈচালা, বস্তুল, মানিকচাপর, ক্ষীরশিনসহ বিভিন্ন গ্রামে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দেওয়ালি জ্বালানোর মধ্য দিয়ে উৎসবের শুরু হয়েছে। শুক্রবার সকালে প্রতিটি আদিবাসী কৃষক পরিবারের গোয়াল ঘরে পূজা দেওয়া হবে। এদিকে অতিথি আপ্যায়নের জন্য আতপ চালের সঙ্গে পাঁঠার মাথার মাংস দিয়ে রান্না করা হয়েছে খিচুড়ি। পাঁঠাবলি এবং আপ্যায়ন শেষে আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকজন গবাদি পশুকে নাচানোর কাজটি করবেন শনিবার।
মন্তব্য করুন