ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি ১৫ টাকা বাড়িয়েছে সরকার। অথচ কোনও ঘোষণা ও সরকারি নির্দেশনা ছাড়াই ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে যাত্রীবাহী বাসে ভাড়া এক লাফে জনপ্রতি ১৪ টাকা বেশি আদা করছে পরিবহনগুলো। এতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এই রুটে বাসের অতিরিক্ত ভাড়াকে কেন্দ্র করে পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডা হয়েছে যাত্রীদের। কয়েকটি স্থানে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। ক্ষোভ বিরাজ করছে যাত্রীদের মধ্যে। 

বাস মালিকরা বলছেন, বুধবার মধ্যরাত থেকে ডিজেলের দাম লিটার প্রতি ১৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে। ফলে আমাদের ভাড়া বাড়ানো ছাড়া কোন উপায় নেই। এদিকে অযৌক্তিক এই ভাড়া প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে নারায়ণগঞ্জ যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকা নারায়ণগঞ্জ রুটে চলাচলকারী বন্ধন ও উৎসব পরিবহনের ভাড়া ছিল ৩৬ টাকা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এই ভাড়া ১৪ টাকা বাড়িয়ে প্রতি যাত্রীর কাছ থেকে ৫০ টাকা করে আদায় করছে। একই ভাবে হিমাচল, মৌমিতাসহ অন্যান্য পরিবহনেও আদায় করা হচ্ছে জনপ্রতি ১৪ টাকা বেশি ভাড়া। ৩৬ টাকা ভাড়া লেখা টিকিটের উল্টো পিঠে ৫০ টাকা সীল দিয়ে এই ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ থেকে ছেড়ে যাওয়া বিভিন্ন রুটে কয়েকগুন বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। তবে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় যাতায়াত করা এসি বাস শীতল ভাড়া বাড়িয়েছে ১০ টাকা। আগে শীতল পরিবহন ভাড়া নিতো ৫৫ টাকা বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নিচ্ছে ৬৫ টাকা।

চাষাড়া বন্ধন বাস কাউন্টারের সামনে যাত্রী লুৎফর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশটা কি মগের মুল্লুক? কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। একলাফে ভাড়া ১৪টাকা বাড়ছে, কে নিয়ন্ত্রণ করবে এসব। প্রশাসনকে এখনই ব্যবস্থা নেওয়া দাবী জানাই।

আরেক যাত্রী রনি জানান, ডিজেলের দাম বাড়ছে তাই বলে প্রতি যাত্রীর কাছে ১৪ টাকা বেশি নিতে হবে? এসবের কি কোন সমাধান নেই?

এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হলে বন্ধন পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জুয়েল আহমেদ বলেন, ডিজেলসহ সব কিছুর দাম বেড়েছে। ভাড়া না বাড়িয়ে আমাদের কোন উপায় ছিল না। 

নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, 'আমরা ডিজেল ও কেরসিনের মূল্য বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন পেয়েছি। কিন্তু বাস ভাড়া বৃদ্ধির কোন প্রজ্ঞাপন পাইনি। আশা করছি আগামী ২/১ দিনের মধ্যে এ বিষয়টিও সরকারের পক্ষ থেকে নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। এর আগে কোন পরিবহন কর্তৃপক্ষ ভাড়া বেশি নিতে পারবে না। আমরা বিআরটিসি কর্তৃপক্ষকে সে ভাবেই নির্দেশনা দিয়েছি। যদি কেউ এর ব্যত্যয় করে তাহলে আমরা ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।'