- সারাদেশ
- নৌকাবাইচ দেখতে লাখো মানুষের ঢল
নৌকাবাইচ দেখতে লাখো মানুষের ঢল

শেখ হাসিনা সেতু সংলগ্ন মধুমতি নদীতে বিহারী লাল নৌকাবাইচ নামে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়- সমকাল
শেখ হাসিনা সেতুসহ মধুমতি নদীর দুই তীরে উৎসুক লাখো মানুষ। নদীর দক্ষিণে রুইজানি এলাকা থেকে ছেড়ে আসবে ১৮টি সুসজ্জিত বাইচের নৌকা। লাখো দর্শক দু'চোখ ভরে দেখবে নৌকাবাইচ। তিল পরিমাণ ঠাঁই নেই কোথাও। ঘড়ির কাঁটা তখন চারটা ছুঁই ছুঁই করছে। এসময় চড়ন্দারের ঘঁণ্টার টং টং আওয়াজের তালে তাল মিলিয়ে বাইচাররা হেলেদুলে বইঠা টেনে ছুটে আসেন দুরন্ত গতিতে। মধুমতি নদীতে বৈঠার ছন্দ উপস্থিত দর্শককে যেন উল্লসিত করে তোলে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে শেখ হাসিনা সেতু সংলগ্ন মধুমতি নদীতে বিহারী লাল নৌকাবাইচ নামে এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। খুলনা ও রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ১৮টি সুসজ্জিত বাইচের নৌকা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে।
জানা যায়, এটা ছিল দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ গ্রামীণ ঐতিহ্য নৌকাবাইচ। নৌকাবাইচকে ঘিরে এ অঞ্চলে দেখা মিলে মেলার। আর এ মেলাকে ঘিরে মহম্মদপুর উপজেলা সদরসহ আশে-পাশের অন্তত দশ গ্রামে কয়েকদিন আগে থেকেই শুরু হয়েছে উৎসব।
বসুরধূলজুড়ী, ভোলানাথপুর, রুইজানী, গোপালরগর, জাঙ্গালিয়া, ধুপুড়িয়া, রায়পাশা, চরমুরাইল, চরজাঙ্গালিয়া, চররুইজানীসহ আশেপাশে অন্তত ২০ গ্রামের মানুষসহ পার্শ্ববর্তী জেলার কয়েক লাখ মানুষ মেতেছিলেন নৌকাবাইচ উপভোগে। শেখ হাসিনা সেতু সংলগ্ন প্রায় চার কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বসেছে মেলার সুসজ্জিত স্টল। উপজেলার বিনোদপুর থেকে শেখ হাসিনা সেতু পর্যন্ত প্রায় দশ কিলোমিটার সড়কে ব্যানার,পোষ্টার ও গেট সাজিয়ে সৌন্দর্য বর্ধন করে মেলাকে আকর্ষণীয় করে তোলা হয়। অন্যদিকে চারু, কারু, কাঠ-বাঁশ ও বেতের আসবাবপত্র, তৈজসপত্র, মিষ্টি মাছসহ রকমারি পণ্যের পসরা সাজিয়ে হাজার হাজার স্টল ও পুরো মেলা জুড়ে চলে ক্রেতা-বিক্রেতার মিলনমেলা। মূল মেলা একদিনের হলেও মেলার আগে ও পরে কয়েকদিন ধরে চলে এসব কেনাবেচা। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর কেনাবেচাও ভালো বলছেন বিক্রেতারা।
এ মেলার মূল আকর্ষণ নৈাকাবাইচ প্রতিযোগিতা হলেও মেলা ঘিরে এসব গ্রামে জামাই আদর রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। ঈদে না হলেও অন্তত মেলা উপলক্ষে জামাই-মেয়েকে দাওয়াত দেওয়া হয়।
উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে স্থানীয় এমপি ড. বীরেন শিকদারের সহায়তায় তার প্রয়াত পিতা বিহারী লাল শিকদারের নামে অনুষ্ঠিত হয় এই নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন তিনি।
উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার আহবায়ক, মেলা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রামানন্দ পালের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাগুরা জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জহিরেুল ইসলাম, উপজেলা চেয়ারম্যান আবু আব্দুল্লাহেল কাফী প্রমূখ।
মন্তব্য করুন