নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার বিরুদ্ধে বসুরহাট বাজারের চার ব্যবসায়ীকে মারধর এবং ইউএনও পরিচালিত একটি মার্কেটে তালা মেরে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

ব্যবসায়ীরা হলেন- মোহাম্মদ আলী, রহমানিয়া ফার্মেসির আব্দুর রহমান, রহীম উল্যাহ রিটু ও মফিজুল হক মিন্টু। শনিবার সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে বসুরহাট বাজারের কলেজ রোড ও বসুরহাট ব্যবসায়ী সমিতির সামনে এসব ঘটনা ঘটে। তবে কাদের মির্জা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বসুরহাট রোডের ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকের সামনে অবস্থিত রহমানিয়া ফার্মেসিতে সকাল ১১টার দিকে ১০-১৫ জন অনুসারী নিয়ে উপস্থিত হন কাদের মির্জা। এ সময় তিনি ওই ফার্মেসিতে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র কামাল উদ্দিন চৌধুরীসহ বিএনপির কয়েকজন নেতা বসার অভিযোগ তুলে প্রতিষ্ঠানের মালিক আব্দুর রহমান ও তার ছেলেকে চড়-থাপ্পড় মারেন। একই সময়ে রহমানিয়া ফার্মেসির সামনে অবস্থিত কেবি শুজ শোরুমের মালিক মিন্টুকেও একইভাবে লাঞ্ছিত করেন কাদের মির্জা। এ ছাড়াও কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ গ্রুপের অনুসারী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি নিজাম উদ্দিন মুন্নার বাবা মোহাম্মদ আলীকে তার দোকানের সামনে জিনিসপত্র রাখার অভিযোগ তুলে মারধর করেন। এ সময় কাদের মির্জার নেতৃত্বে তার অনুসারীরা বসুরহাট বাজারে কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে এবং বসুরহাট বাজারের জিরো পয়েন্ট এলাকায় ইউএনও পরিচালিত স্কাউট ভবন মার্কেটের সামনে মোটরসাইকেল পার্কিং ও ফল দোকান থাকার অভিযোগে মার্কেটের প্রধান ফটকে তালা মেরে দেয়। একই সময় একই অভিযোগ এনে বসুরহাটের রূপালী চত্বরের পাশে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কামাল চৌধুরী ও তার ভাই সফিউল চৌধুরীর মালিকানাকাধীন তানহা কমপ্লেক্স ও চৌধুরী কমপ্লেক্স নামে দুটি মার্কেটে তালা মেরে দেওয়া হয়। পরে দুপুরের দিকে তানহা কমপ্লেক্স ও চৌধুরী কমপ্লেক্স মার্কেটের তালা খুলে দেওয়া হয়। তবে এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা ভয়ে নাম প্রকাশ করে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করেন।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের মুখপাত্র ও কাদের মির্জার ভাগ্নে মাহবুবুর রশিদ মঞ্জু বলেন, কাদের মির্জার চাহিদা অনুযায়ী যারা চাঁদা না দেয়, তাদেরকেই তিনি লাঞ্ছিত করছেন। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভোটে এসব কর্মকাণ্ডের ব্যাপক প্রভাব পড়বে।

এ বিষয়ে মেয়র আবদুল কাদের মির্জা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, চাঁদাবাজির প্রশ্নই ওঠে না। পৌরবাসীর কাছে আমার দায়বদ্ধতা আছে। তাই যারা রাস্তাঘাট ও ফুটপাত দখল করে রেখেছে, তাদের একটু ভয়ভীতি দেখিয়েছি ও শাসন করেছি। কাউকে মারধর করা হয়নি। অবৈধভাবে পার্কিং করা মোটরসাইকেল সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমার এসব ভালো কাজ অনেকেরই পচ্ছন্দ হচ্ছে না। তাই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে।

এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, এসব ঘটনা তিনি মৌখিকভাবে শুনেছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।