- সারাদেশ
- তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন জটিল প্রক্রিয়া : দোরাইস্বামী
তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন জটিল প্রক্রিয়া : দোরাইস্বামী

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী। ছবি: সমকাল
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেছেন, ‘তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়ন জটিল প্রক্রিয়া। ভারতের জনগণের চাহিদা ও প্রত্যাশা এবং পানি প্রাপ্তি সাপেক্ষে তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়নে ভারত সরকারের আপত্তি নেই। শুষ্ক মৌসুমে ভারতে অতিমাত্রায় বৃষ্টিপাতের কারণে ২০ অক্টোবর তিস্তাসহ অন্যান্য নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। ভারত সরকার রেডিও ওয়ারলেস ও ই-মেইলের মাধ্যমে এ বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারকে জানিয়েছিল। সতর্কতামূলক বার্তা পাঠিয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘বন্যা প্রাকৃতিক বিষয়, এটি ভারত সরকার রোধ করতে পারবে না। কিন্তু প্রতিবেশী দেশকে সতর্ক করতে পারবে। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বর্ষাকাল ছাড়াও অসময়ে ভারী বৃষ্টিপাত ও বন্যা হওয়ায় বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশনের বন্যা সতর্কীকরণ আবহাওয়ার পূর্বাভাস ১৫ অক্টোবর থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো প্রয়োজন। এজন্য বাংলাদেশের প্রস্তাবে ভারত সম্মত আছে।’
মঙ্গলবার দুপুরে রংপুর সিটি করপোরেশনে লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্স প্রদান অনুষ্ঠানে এসে তিনি এসব কথা বলেন।
ভারতীয় হাই কমিশনার বলেন, ‘সীমান্ত হত্যা কোনো দেশরই কাম্য নয়। বাংলাদেশি ও ভারতীয়রা দেখতে একই রকম। চোরাকারবারীরা মধ্য রাতে অথবা খুব সকালে অবৈধ পথে পণ্য আনা নেওয়া করে। আমাদের বর্ডার গার্ডের ওপর হামলা চালায়। দুই দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর কর্মকর্তারা আলোচনার ভিত্তিতে সীমান্ত দিয়ে চোরাচালান বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়াসহ সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে সক্ষম হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ভারতের ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক খুবই গভীর এবং বর্তমান সরকারের সময়ে তা আরও সম্প্রসারিত হচ্ছে। বাংলাদেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও যোগাযোগ অবকাঠামোসহ সকল ক্ষেত্রে সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে।’
মাদক চোরাচালান বন্ধে দুই দেশের সরকারের ব্যবস্থা নিতে হবে মন্তব্য করে ভারতীয় হাই কমিশনার বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারত সরকারকে মাদক চোরাচালন বন্ধে আরও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কারণ এ দুটি দেশ মাদক কারবারীদের মাদক বিক্রয়ের স্থান ও রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এর ফলে দুই দেশের যুব সমাজ ঝুঁকির মাঝে রয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান কার্যক্রম আরও বাড়ানো গেলে এটি দ্রুত প্রতিরোধ করা সম্ভব।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরে এসে ১০৯টি অ্যাম্বুলেন্স দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তারই অংশ হিসেবে সিটি করপোরেশনকে একটি অ্যাম্বুলেন্সের চাবি হস্তান্তর করেন ভারতীয় হাই কমিশনার।
এর আগে তিনি ভারত সরকারের সহায়তায় সড়ক উন্নয়নের কাজ পরিদর্শন এবং সিটি কাউন্সিলর ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে ভারতের সহকারী হাই কমিশনার সঞ্জীব ভাট্টি, সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন মিয়া, প্যানেল মেয়র মাহমুদুর রহমান টিটুসহ কাউন্সিলরবৃন্দ ও সুধীজন উপস্থিত ছিলেন। পরে তিনি মাহিগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও রংপুর চেম্বার আয়োজিত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। এর পরে তিনি মাওলানা কেরামত আলী (র.) মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বিকেলে কাউনিয়া উপজেলার মীরবাগে একটি আশ্রম পরিদর্শন করেন।
মন্তব্য করুন