বেনাপোল নোম্যান্সল্যান্ডে বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি গতিশীল করতে দু‘দেশের বন্দর কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে এক যৌথ বৈঠক হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশন ও পেট্রাপোল সিএইচএ স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। 

বৈঠকে দু’দেশের কাস্টম, বন্দর ও বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রতিদিন ৭০০ ট্রাক পণ্য আমদানির সিদ্ধান্ত হয়, যা এখন আমদানি হচ্ছে ৩৫০ ট্রাকের বেশি।  

বৈঠকে বক্তারা বলেন, ভারতের বনগাঁ পৌরসভার কালিতলা পার্কিংয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় আছে প্রায় আট হাজার ভারতীয় ট্রাক। কালিতলা পার্কিং সিরিয়ালের নামে এসব ট্রাক দীর্ঘদিন আটকে রাখছে। বনগাঁর এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা পৌরসভার কতিপয় ব্যক্তিদের মোটা অঙ্কের টাকায় ম্যানেজ করে ট্রাক সিরিয়াল ব্রেক করে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। 

ভারতের পক্ষে বক্তব্য দেন পেট্রাপোল কাস্টমসের সহকারী কমিশনার, বনগাঁ পৌরসভার প্রশাসক গোপাল শেট এবং বন্দর কর্মকর্তারা। বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য দেন বেনাপোল কাস্টমস হাউসের যুগ্ম কমিশনার আব্দুল রশিদ মিয়া, উপ-কমিশনার অনুপম চাকমা, বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) আব্দুল জলিল, সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক সঞ্জয়) বাড়ৈ, বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন, সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা, বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমানসহ ব্যবসায়ীরা। 

বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক আব্দুল জলিল বলেন, কালিতলা পার্কিংয়ের যে ট্রাকগুলো বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় আছে, সেজন্য ভারতীয় বন্দর ও পৌরসভা আন্তরিক হলে ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবেন। বেনাপোল স্থল বন্দরের প্রতিদিন ৭০০ ট্রাক নেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, ভারতের কালিতলা পার্কিংয়ে ও সিডব্লিউসিতে এক মাস একটা আমদানিকৃত পণ্যবাহী ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকলে প্রতিদিন দুই হাজার টাকা করে ড্যামারেজ দিতে হয়। এতে করে ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবসায়ীরা। এখানে দুই দেশের কাস্টমস বন্দর কর্মকর্তারা আছেন, আপনারা একটু এই বিষয়টা গুরুত্ব সহকারে দেখবেন, তা নাহলে এই বন্দর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন ব্যবসায়ীরা।

বেনাপোল কাস্টমস হাউসের যুগ্ম-কমিশনার আব্দুল রশিদ মিয়া জানান, ভারতের কার্গো রিলেটেড যে সমস্যা আছে সেগুলি কার্গো শাখাতেই সমাধানের  ব্যবস্থা করা হবে। প্রতিদিন ৭০০ ট্রাক পণ্য আমদানিতে বন্দর কর্তৃপক্ষ রাজি হয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে কাস্টমসের কোনো বাধা নেই। অন্যান্য বিষয়গুলি বন্দর ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে আলোচনা করে দ্রুত সমাধান করা হবে। 

ভারতের বনগাঁ পৌরসভার প্রশাসক গোপাল শেট বলেন, ট্রাক আটকিয়ে রাখা পৌরসভার কাজ নয়। বেনাপোল বন্দর প্রতিদিন বেশি বেশি ট্রাক আমদানির অনুমতি দিলে বনগাঁ শহর যানজট মুক্ত হতো।