৯৭ বছর বয়সী বিধবা রাবেয়া বেগম এখন হাসপাতালের শয্যায় কাতরাচ্ছেন। প্রবীণ এই নারীর মুখের মাড়ি ফেটে গেছে। পুরো শরীর ব্যথায় নড়াচড়া করতে কষ্ট হয়। লাথি, চড়থাপ্পড় নিত্যদিনের ঘটনা।

বৃদ্ধাকে নির্যাতনের এমন অভিযোগ তার ছেলের স্ত্রী খায়রুন্নাহার হেনার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায়  বৃহস্পতিবার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন মিজানুর রহমান। মামলায় স্ত্রীর ভাইকেও আসামি করা হয়েছে।

জানা গেছে, মিজানুর রহমানের প্রথম স্ত্রী না থাকায় বৃদ্ধা মা তার এক আত্মীয়ের মেয়ে খায়রুন্নাহার হেনাকে ২০১৭ সালে ছেলের বউ করে আনেন। জীবনের শেষ ক'টি দিন একটু শান্তিতে থাকতে চেয়েছিলেন। তার ছেলে মিজানুর কলাপাড়া পৌরসভার চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। রাবেয়া বেগম ও হেনা উপজেলার নিশানবাড়িয়া মাছুয়াখালী গ্রামের বাড়িতে থাকতেন। হেনার চালচলনে সতর্ক করলে প্রচণ্ড গালাগাল করা হতো শাশুড়িকে।

মিজানুর তার মামলায় উল্লেখ করেন, ২২ নভেম্বর সন্ধ্যায় ঘরের মালপত্রসহ স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকা নিয়ে খায়রুন্নাহার ভাইয়ের বাড়িতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয়। এতে বাধা দিলে শাশুড়ি রাবেয়া বেগমকে বেধড়ক মারধর করে। এমনকি মারধরে ঠোঁট ফেটে রক্তাক্ত জখম হয়। বুক-পিঠে লাথি, কিল-ঘুষি দেওয়া হয়। বৃদ্ধা চিৎকার করলে লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে। কিন্তু এর মধ্যে খায়রুন্নাহার ভ্যানে করে মালপত্র নিয়ে ভাইয়ের বাড়ি চলে যায়।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাবেয়া বেগম জানান, শখ করে খায়রুন্নাহারকে ছেলের বউ করেছিলেন। কিন্তু এখন সব দুঃসহ স্মৃতি। ভাতের সঙ্গে একটু মরিচ ভর্তা চাইলেও মুখের ওপর চড়থাপ্পড় দিত ছেলের বউ। এমনকি ঝাড়ূপেটা পর্যন্ত করা হয়েছে। নির্যাতনের কথা বলতে বলতে চোখের পানি ধরে রাখতে পারছিলেন না এই বৃদ্ধা।

মিজানুর রহমান জানান, তিনি স্ত্রীর নৃশংসতার বিচার চান।

চিকিৎসক সায়মা সুলতানা বলেন, তার মুখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারধরের কথা তাকে জানিয়েছেন বৃদ্ধা।