আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, মানবিকতা আন্দোলনের মাধ্যমে কামাই (আদায়) করা যায় না। আর আইন আইনের গতিতে চলবে। আইন জিয়াউর রহমানের গতিতে চলবে না। আইন আপনাদের গতিতে চলবে না। আইনের বইয়ে আইন যেভাবে চলে সেইভাবে চলবে। শুক্রবার সকালে আখাউড়া পৌর শহরে মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট সিরাজুল হক পৌর মুক্তমঞ্চে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘গত বছরের মার্চ মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে বলেছেন খালেদা জিয়া অসুস্থ বলছে তারা (বিএনপি), উনি জেলখানায় আছেন অনেকদিন হয়েছে। তুমি একটা কাজ কর তার পরিবার একটা দরখাস্ত দিয়েছে আইনের মারফত তাকে ছেড়ে দাও। আমরা তাকে দুইটা শর্তে ছাড়লাম। একটা হচ্ছে বিদেশ যেতে পারবে না, আরেকটা হচ্ছে উনি বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন। আমরা বলেনি যে উনি হাসপাতালে যেতে পারবেন না। উনি তিনবার হাসপাতালে গেছেন। যখন বিচারিক আদালত তাকে সাজা দিয়েছে ৫ বছর। আপিল করেছে হাইকোর্টে। হাইকোর্ট সেই সাজা বাড়িয়ে করেছে ১০ বছর। অন্যায় এত গভীর- এতিমের টাকা মেরে দিয়েছে সেজন্য ৫ বছরের জায়গায় ১০ বছর সাজা হয়েছে। তারপর জামিন চেয়েছে জামিন দেয়নি আদালত। আরেকটা মামলা দুস্থদের সেবা করার জন্য বিদেশ থেকে টাকা আসছে। সেই টাকা মেরে দিয়েছে উনি, উনার ছেলেরা। সেখানেও বিচারিক আদালত ৭ বছরের জেল দিয়েছে।’ 

আইনমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচনে খালেদা জিয়া একটা সংসদ বানিয়েছিলেন। সেই সংসদে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি খন্দকার আবদুর রশিদকে বিরোধী দলীয় নেতা বানিয়েছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের সেই দিনের সাড়ে সাত কোটি মানুষের অসংবাদিত নেতা, সমগ্র বাংলাদেশের একমাত্র পরিচিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানকে তার পরিবারের ১৭ জনসহ নৃশংভাবে হত্যা করা হয়েছিল। এ সত্য কথাটা জানার পরও ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়া মিথ্যা জন্মদিন সাজিয়ে কেক কাটে। এত কিছুর পরও মানবিক কারণে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশে তাকে (খালেদা জিয়াকে) মুক্তি দেওয়া হয়েছে দণ্ডাদেশ স্থগিত রেখে। 

তিনি বলেন, একটা প্রবাদ আছে ‘দাঁড়াতে দিলে বসতে চায়, বসতে দিলে শুইতে চায়। শুইতে দিলে ঘুমাতে চায়।’ এখন অবস্থা হয়েছে এ রকম। এখন কয় বিদেশে যেতে দিতে হবে। পরিস্কার কথা যে আইনে একটা দরখাস্ত নিষ্পত্তি হয়ে থাকে। সেই নিষ্পত্তিকৃত দরখাস্ত আবার পুনর্বিবেচনা করার সুযোগ থাকে না। উনার বিদেশ যাওয়ার জন্য তার পক্ষে ১৫ জন আইনজীবী আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। যে আইনে আমি নাকচ করেছি সেটা সঠিক। তারপরও উনারা যেটা বলছেন কোথাও কোনো নজির আছে কিনা সেটা দেখার জন্য আমি একটু সময় নিয়েছি। এটা দেখে উনারা বলেন, আন্দোলন করবেন এক দফা এক দাবি। 

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ (অব.) মো. জয়নাল আবেদীন, পৌর মেয়র মো. তাকজিল খলিফা কাজল প্রমুখ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আইন সচিব গোলাম সারওয়ার, ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান, পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমান, কসবা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রাশেদুল কাউছার জীবন, আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার রম্নমানা আক্তার, আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সেলিম ভূইয়া, মনির হোসেন বাবুল ও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন বেগ শাপলু।