- সারাদেশ
- কুষ্টিয়ার এমপি বাদশার বিরুদ্ধে বিএনপির প্রতি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ
কুষ্টিয়ার এমপি বাদশার বিরুদ্ধে বিএনপির প্রতি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ইউপি নির্বাচনে বিএনপি নেতার শিল্পপতির ভাইয়ের কাছ থেকে অর্থ ও ফ্ল্যাট নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে ‘সুপরিকল্পিতভাবে হারানোর’ অভিযোগ উঠেছে কুষ্টিয়া-১ আসনের সংসদ সদস্য আ.ক.ম সরওয়ার জাহান বাদশার বিরুদ্ধে।
সদ্য শেষ হওয়া তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে দৌলতপুর উপজেলায় ভোট অনুষ্ঠিত হয়। ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪টি আওয়ামী লীগ, ২ বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ৮জন বিদ্রোহী জয়ী হয়েছে।
আর বাদশার ইউনিয়ন ফিলিপনগরে নৌকার শোচনীয় পরাজয় হয়েছে। সেখানে জয়ী হয়েছে আরমা গ্রুপের কর্ণধার আব্দুর রাজ্জাকের ছোট ভাই ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি নঈম উদ্দিন সেন্টু।
পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী এ.কে.এম ফজজুল হক পান ৪ হাজার ৫৯৩ ভোট।
অপরদিকে চমশা প্রতীকে নঈম উদ্দিন সেন্টু পান ৭ হাজার ১৪০ ভোট। এ ইউনিয়নে আরো দুই বিদ্রোহী প্রার্থী মিলে ভোট পান ৭ হাজারে বেশি।
এ নির্বাচনে পরাজয়ের জন্য এমপি বাদশাকেই দুষছেন ওই ইউনিয়নের পরাজিত প্রার্থী এ.কে.এম ফজলুল হক।
এ.কে.এম ফজলুল হক গত ৫ ডিসেম্বর জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। লিখিত অভিযোগে সাংসদসহ উপজেলা ও ইউনিয়ন নেতাদের বিরুদ্ধে ১১টি অভিযোগ তুলে ধরেন। সাংসদ সরওয়ার জাহান বাদশা দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগেরও সভাপতি।
অভিযোগে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় সাংসদ সরওয়ার জাহান বাদশা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হায়দার আলীর বিরুদ্ধে অর্থ নিয়ে প্রশাসনকে ব্যবহার করে নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করেন। ছোট ভাইকে বিজয়ী করতে আরমা গ্রুপের কর্ণধার আব্দুর রাজ্জাকের কাছ থেকে ঢাকার আফতাবনগরে সাংসদ সরওয়ার জাহান বাদশা ফ্ল্যাট উপহার নেন। তিনি নীতি ও আদর্শকে বিসর্জন দিয়ে বিএনপি নেতা নঈম উদ্দিন সেন্টুকে জয়ী করে এবং সুপরিকল্পিত ভাবে নৌকাকে পরাজিত করেন।’
তিনি অভিযোগ করেন, সংসদ সদস্য বাদশা শিবিরের ক’জন চিহ্নিত নেতাকে আওয়ামী লীগে অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
ভোটের দিন তাদের ‘নেতৃত্বে’ আওয়ামী লীগ কর্মীদের বাড়িতে ‘বোমা হামলা’ হয়েছে বলে জানান ফজলুল হক।
তিনি বলেন, ‘ভয়ে আওয়ামী লীগের অনেক সাধারণ কর্মী নৌকায় ভোট দিতে পারেনি। ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ নেতা মাহাবুল মাষ্টার, নাসির উদ্দিন, শহিদুল ইসলামসহ অন্য নেতারা প্রকাশ্যে নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় এমপির নির্দেশে।’
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শরীফ উদ্দিন রিমন বলেন, ‘আমিও লিখিত অভিযোগের একটি কপি পেয়েছি। নেতারা মঞ্চে বক্তব্য দিয়েছে একরকম আর ভেতরে ভেতরে গেম খেলেছে অন্য রকম। বিষয়টি তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আজগর আলী বলেন, ‘এমপির বিরুদ্ধে একটি গুরুতর অভিযোগ পেয়েছি। লিখিত অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি দলীয় সভায় আলোচনা করে তদন্ত টিম গঠন করা হবে। কেউ যদি নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় আর তা প্রমান হয় তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
‘ফজলুলকে সিলেকশন ছিল ভুল’
ফিলিপনগর ইউনিয়নের নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী এ.কে.এম ফজলুল হকের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য সরওয়ার জাহান বাদশা।
তিনি বলেন, ‘প্রার্থী সিলেকশনে ভুল ছিল। আর ফজলুল হক যে অভিযোগ করেছে, তার কোনো সত্যতা নেই। কারণ তার নিজেরই কোনো জনপ্রয়িতা ছিল না। তার বিরুদ্ধেই মানুষের নানা অভিযোগ। তার নিজের লোকজনই তাকে ভোট দেয়নি।’
ঢাকার আফতাবনগরে ফ্ল্যাট নেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন,‘ফ্ল্যাট কিনেছি এমপি হওয়ারও আগে। টাকা পয়সা নেয়ার প্রশ্নই উঠে না। একটি চক্র কারও পরামর্শে এ কাজ করেছে। আমাকে হেয় করতে তারা কাজ করছে।’
দৌলতপুর উপজেলায় সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে বলে উল্লেখ করে বাদশা বলেন, ‘উপজেলার সব ইউনিয়নে অবাধ নির্বাচন হয়েছে। জনগন যাকে ভোট দিয়েছে সে জিতেছে।’
মন্তব্য করুন