- সারাদেশ
- কিলিং মিশনে অস্ত্র সংগ্রহ নিয়ে তথ্য দিল রিশাত
কুমিল্লায় কাউন্সিলর হত্যা
কিলিং মিশনে অস্ত্র সংগ্রহ নিয়ে তথ্য দিল রিশাত

গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে এমরান হোসেন ওরফে রিশাত (মাঝে)।
কুমিল্লা নগরীতে সহযোগীসহ ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ মো. সোহেল খুনে ব্যবহার করা অস্ত্র-গুলি সংগ্রহ করা হয়েছিল পাহাড়ি এলাকা খাগড়াছড়ির এক অস্ত্র ব্যবসায়ীর কাছ থেকে। এসব অস্ত্র কিনতে অর্থ লেনদেন এবং কিলিং মিশনে নেতৃত্ব দেওয়া শাহ আলমের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে ছিল গ্রেপ্তার এমরান হোসেন ওরফে রিশাত নামের যুবক।
বৃহস্পতিবার তাকে কুমিল্লার আমলি আদালত-১-এর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা আক্তারের আদালতে হাজির করা হলে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। জবানবন্দিতে সে কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া, হিট স্কোয়াডে থাকা অন্যদের নাম প্রকাশসহ অস্ত্র ব্যবসায়ীদের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে বলে মামলার তদন্তকারী সংস্থা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) জানিয়েছে। তবে এখনই অস্ত্র সরবরাহে জড়িত ব্যক্তিদের নাম জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেছে প্রশাসন।
ডিবি সূত্রে জানা যায়, চাঞ্চল্যকর এ কিলিং মিশনে থাকা সদস্য ও সিসিটিভি ফুটেজে শনাক্ত এবং তদন্তে পাওয়া আসামি জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুণবতী গ্রামের মৃত বাচ্চু মিয়ার ছেলে রিশাত ও কুমিল্লা নগরীর শুভপুর এলাকার মিজানুর রহমানের ছেলে মো. নাজিম ওরফে নাদিমকে গত সোমবার গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বুধবার নাজিম কাউন্সিলরকে হত্যার পরিকল্পনাসহ নানা বিষয়ে তথ্য দেয়। পরে সন্ধ্যায় তাকে আদালতে হাজির করলে সে ঘটনার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। রাতে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। অন্য আসামি রিশাত বৃহস্পতিবার পুলিশের কাছে কিলিং মিশনে ব্যবহৃত অস্ত্র সংগ্রহ ও ঘটনার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে রাজি হলে তাকে সন্ধ্যায় আদালতে হাজির করা হয়। কুমিল্লার আমলি আদালত-১-এর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা আক্তার তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
জেলা ডিবির ওসি সত্যজিৎ বড়ূয়া সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে রিশাত। সহযোগীসহ কাউন্সিলরের কিলিং মিশনে থাকার পাশাপাশি সে অস্ত্র সরবরাহ করে- এমন একটি চক্র থেকে অস্ত্র কিনে দিয়েছিল ঘাতকদের। সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব বিষয়ে অনেক তথ্য দিয়েছে। তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে অভিযান চালানো হবে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মঞ্জুর কাদের ভূঁইয়া জানান, কাউন্সিলর সোহেল হত্যায় আগে গ্রেপ্তার আরও চার আসামিকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তারা হলো- আলম মিয়া, আশিকুর রহমান রকি, মাসুম ও জিসান। শুক্রবার তাদের আদালতে তোলা হবে।
উল্লেখ্য, গত ২২ নভেম্বর নগরীর পাথুরিয়াপাড়া এলাকায় নিজ কার্যালয়ে অবস্থানকালে কাউন্সিলর সৈয়দ মো. সোহেল ও তার সহযোগী হরিপদ সাহাকে গুলি করে হত্যা করে মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই সৈয়দ মো. রুমন বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৮-১০ জনের নামে মামলা করেন। এ মামলার প্রধান আসামি শাহ আলম ২ ডিসেম্বর গভীর রাতে এবং এর আগে ৩০ নভেম্বর গভীর রাতে ৩ নম্বর আসামি সাব্বির হোসেন ও ৫ নম্বর আসামি সাজন পুলিশের সঙ্গে পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়।
মন্তব্য করুন