- সারাদেশ
- ইউপি সচিবের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানিসহ নানা অভিযোগ
ইউপি সচিবের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানিসহ নানা অভিযোগ

প্রতীকী ছবি
দ্রুত জন্মনিবন্ধন সনদ সংশোধন করে দেওয়ার আশ্বাসে যৌন হয়রানিসহ নানা অভিযোগ উঠেছে গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিব তৈয়বুর রহমানের বিরুদ্ধে।
দৌলতদিয়া বাজার এলাকার বাসিন্দা এক গার্মেন্টকর্মী জানান, বর্তমানে গার্মেন্টে চাকরির ক্ষেত্রে ডিজিটাল জন্মনিবন্ধন সনদ জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। ফলে তিনি ডিজিটাল সনদ করতে কিছুদিন আগে ইউনিয়ন পরিষদে যান। সেখানে সচিব তৈয়বুর রহমান সনদটি ডিজিটাল করে দেওয়ার আশ্বাসে তাকে অযথা বারবার ঘুরাতে থাকেন। প্রায়ই তিনি তাকে সন্ধ্যায় অফিসে যেতে বলেন। সেখানে যাওয়ার পর তিনি নেটওয়ার্কের সমস্যার কথা বলে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত বসিয়ে রাখেন এবং কুপ্রস্তাবের ইঙ্গিত দিয়ে যৌন হয়রানি করেন। ইতোমধ্যে এভাবে তিনি কয়েকবার শরীরে হাত দেওয়ার চেষ্টা করেন।
ওই তরুণী আরও জানান, তার ছুটির সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ায় সচিবের চাহিদামতো নগদ ৭০০ টাকা দিয়ে জন্মনিবন্ধনটি হাতে পান। তবে আরও ৫০০ টাকা পাঠানোর জন্য তিনি তাকে সাদা কাগজে একটি বিকাশ নম্বর লিখে দেন। তিনি শর্ত দেন- এসব টাকার কথা যেন চেয়ারম্যান না জানে। পরে সে টাকার জন্য তিনি বারবার মোবাইল ফোনে কল দিয়ে তাগিদ দেন। এক পর্যায়ে সচিবের মোবাইল নম্বরটি ব্লক করে রাখেন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদে প্রতিদিন বহু মানুষ জন্মনিবন্ধনের জন্য দিনের পর দিন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তাদের অনেকের কাছ থেকেই সচিব অতিরিক্ত টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে।
চর দৌলতদিয়া এলাকার বাসিন্দা আবুল খাঁ নামে একজন বলেন, সচিব আমার কাছ থেকে একটি জন্মনিবন্ধন সনদ ডিজিটাল করার জন্য ৪০০ টাকা, আরেকটি ৩০০ টাকা নিয়েছেন। তারপরও অনেক দিন ঘুরতে হয়েছে। শাহাদাৎ মেম্বারপাড়া এলাকার রনি খন্দকারও একই অভিযোগ করেন।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, সচিব তৈয়বুর রহমান দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে এখানে কর্মরত। এ সময়ে তিনি অবৈধ পন্থায় বিপুল অর্থ-বিত্তের মালিক হয়েছেন। রাজবাড়ী শহরে আলিশান বাড়ি তৈরি করেছেন। এসব ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিব তৈয়বুর রহমান বলেন, সার্ভারে সমস্যা থাকায় দ্রুত সময়ের মধ্যে নিবন্ধন সংশোধন করে দিতে পারছি না। কারও কাছ থেকে কোনো বাড়তি টাকা নেওয়া হচ্ছে না। তবে পরিচিত কেউ খুশি হয়ে টাকা দিলে তো কিছু করার থাকে না। তরুণীকে জড়িয়ে যা বলা হচ্ছে, এটা একেবারে ভিত্তিহীন। এ ছাড়া অবৈধভাবে কোনো অর্থ-সম্পদ অর্জন করেননি বলে দাবি করেন তিনি।
দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আ. রহমান মণ্ডল বলেন, চেয়ারম্যান হিসেবে মাত্র দুই বছর দায়িত্ব পালন করছি। সচিবের দীর্ঘ দিনের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণা নেই। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সচিবের বিষয়ে তার কাছেও কোনো অভিযোগ আসেনি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুল হক বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন