নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের ইস্যুতে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের চলমান সংলাপে অংশ নিচ্ছে না বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ। অন্যদিকে, ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরামের অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে। সংগঠনটির একটি অংশের নেতারা বলছেন, তারা সংলাপে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন; অন্য পক্ষের নেতারা বলছেন, তারা যাবেন না।

গত ২০ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচন কমিশন গঠন ইস্যুতে দেশের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছেন রাষ্ট্রপতি। ইতোমধ্যে জাতীয় পার্টি ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সঙ্গে সংলাপ শেষ হয়েছে। আরও ১০টি দলের সঙ্গে সংলাপের সময়সূচি করা হয়েছে।

এগুলোর মধ্যে বাসদের সঙ্গে সংলাপের সময় আগামীকাল রোববার সন্ধ্যা ৬টায় নির্ধারণ করা হয়েছিল। এ ছাড়া আগামী ২ জানুয়ারি গণফোরাম ও বিকল্পধারা এবং ৩ জানুয়ারি সিপিবি ও গণতন্ত্রী পার্টির সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপের সময়সূচি করা আছে।

কিন্তু বাসদের পক্ষ থেকে অপারগতা প্রকাশ করে গতকাল শুক্রবার রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এতে দলের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান জানিয়েছেন, এর আগে ২০১২ ও ২০১৭ সালে দু'বার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়েছিলাম। এ ছাড়া কমিশনের সঙ্গেও সংলাপে গিয়েছি। এসব সংলাপে দলের পক্ষ থেকে যেসব প্রস্তাবনা দিয়েছিলাম, তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। এ কারণে সংলাপে গিয়ে কোনো লাভ হবে বলে মনে হয় না। চিঠিতে আগের প্রস্তাবনাগুলোকে এখনও 'প্রাসঙ্গিক' বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সংলাপের বিষয়বস্তু তো নতুন না। এর আগেও আমরা প্রস্তাব দিয়েছি। যে এজেন্ডা গতবার ছিল, এবারও তাই। তাই নতুন করে আর আলোচনার বিষয় নেই। বরং রাষ্ট্রপতি এক মাসের মধ্যে ইসি গঠনে আইন প্রণয়ন করতে সংসদের কাছে চিঠি পাঠাতে পারেন।

এদিকে গণফোরামের সংলাপ নিয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে। গণফোরাম নেতাকর্মীরা জানান, দলটির একাংশের সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টু ও সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী সংলাপ নিয়ে ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে দেখা করেন। তখন তাদের ড. কামাল হোসেন জানিয়েছেন, সংলাপে গিয়ে কোনো লাভ হবে না। বরং জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার আন্দোলনকে গুরুত্ব দিতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে কমিশনও নিরপেক্ষ হতে বাধ্য হবে।

অন্যদিকে, দলটির আরেকাংশের নির্বাহী সভাপতি মোকাব্বির খান এমপি সংবাদমাধ্যমকে জানান, তাদের সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নেবে। তিনি বলেন, কমিশন নিয়ে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও পরামর্শ রাষ্ট্রপতির কাছে তুলে ধরব। সংলাপে না গেলে কীভাবে জানাব আমরা কী চাই?

গণফোরাম নেতারা জানান, দলের দুই অংশে দু'রকম সিদ্ধান্ত থাকায় ড. কামাল হোসেন কী সিদ্ধান্ত নেন, তা দেখার অপেক্ষায় আছেন তারা।