দলীয় কোন্দলে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি ফরিদপুরের বোয়ালমারীতেই নৌকার ভরাডুবি হয়েছে। চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ৯টিতেই নৌকা প্রার্থীরা পরাজিত হন। তাদের মধ্যে জামানত হারিয়েছেন তিন প্রার্থী। তারা হলেন চতুল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খন্দকার আবুল বাশার, গুনবাহা উপজেলা কৃষক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল ইসলাম ও দাদপুরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ সাজ্জাদুর রহমান।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বোয়ালমারী উপজেলা বরাবরাই আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। ১৯৯১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত (১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ও ২০০৫-এর উপনির্বাচন বাদে) প্রতিটি নির্বাচনে এ আসন থেকে জিতেছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী। এবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এর ব্যতিক্রম হয়েছে। এবার ১০ ইউনিয়নের মধ্যে শুধু শেখর ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী কামাল আহমেদ জয়ী হয়েছেন। ঘোষপুর, সাতৈর, ময়না ও রূপপাত ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীর অবস্থান দ্বিতীয়। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে দাদপুর ও বোয়ালমারী। পরমেশ্বরদীতে ছয় প্রার্থীর মধ্যে নৌকার অবস্থান চতুর্থ। নির্বাচনে এ ভরাডুবির কারণ হিসেবে দলের ১৬ বিদ্রোহী প্রার্থীকে দায়ী করা হয়েছে। যদিও শেষের দিকে তাদের দল থেকে বহিস্কারও করা হয়। এরপরও শেষ রক্ষা হয়নি। এ ছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রথম সারির অনেক নেতাকে গোপনে বিদ্রোহীদের পক্ষে কাজ করতে দেখা গেছে। এর ফলস্বরূপ ঘাঁটিতেই নৌকাডুবি হয়েছে বলে নেতাকর্মীরা মনে করছেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পীকুল মীরদাহ বলেন, প্রতিটি ইউনিয়নে একাধিক প্রার্থীর নাম সুপারিশ করে কেন্দ্রে পাঠিয়েছি। এলাকায় কোন প্রার্থীর কেমন অবস্থান, তাও জানিয়েছি। কিন্তু বিষয়গুলো আমলে আনা হয়নি।

তিনি বলেন, প্রার্থীরা দুর্বল ছিলেন। তারা মনোনয়ন পাওয়ার পর মাঠে প্রচারে নেমেছেন। অথচ স্বতন্ত্র অনেক প্রার্থীই দু-তিন বছর ধরেই এলাকায় ভিত পোক্ত করে নিয়েছিলেন। নির্বাচনে ভরাডুবির এটাও একটা কারণ।

দলের প্রার্থীর হেরে যাওয়া প্রসঙ্গে সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান জানান, স্থানীয় আওয়ামী লীগ সম্মিলিতভাবে কাজ করেনি। অভ্যন্তরীণ কোন্দল, দলাদলি ও নিজেদের পছন্দ-অপছন্দ কাজ করেছে এ নির্বাচনের ফলাফলে।