- সারাদেশ
- ছেলে নৌকায়, বাবা ছুটছেন ঘোড়া নিয়ে
পাংশার যশাই ইউপি নির্বাচন
ছেলে নৌকায়, বাবা ছুটছেন ঘোড়া নিয়ে

আবু হাসান ও তার বাবা আবদুল হাকিম খান
রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার যশাই ইউনিয়নে বাবা-ছেলের নির্বাচনী যুদ্ধ নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। এই ইউনিয়নে ছেলে আবু হাসান আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী। নৌকার মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী হয়েছেন তার বাবা আবদুল হাকিম খান। পেয়েছেন ঘোড়া প্রতীক। নৌকার প্রার্থী আবু হাসান পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ও স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। আর আবদুল হাকিম এ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও যশাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। ছেলের বিরুদ্ধে তার অভিযোগ, তাকে নির্বাচনী প্রচার চালাতে দেওয়া হচ্ছে না।
পঞ্চম ধাপে আগামী ৫ জানুয়ারি এ ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বাবা-ছেলে ছাড়াও চেয়ারম্যান পদে আরও চারজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন— বর্তমান চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান, জাকের পার্টির প্রার্থী আল মামুন, স্বতন্ত্র তোফাজ্জেল হোসেন ও শাজাহান মিয়া।
স্থানীয় ভোটাররা জানান, বাবা-ছেলের ভোটযুদ্ধ নিয়ে এলাকায় নানা আলোচনা চলছে। দুজনই আওয়ামী লীগের নিবেদিত কর্মী। ভোটাররা কার দিকে যাবেন, কার সঙ্গে কাজ করবেন তা নিয়ে পড়েছেন বিপাকে।
জানা যায়, আবদুল হাকিম যশাই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। ২০১২ সালে তিনি চেয়ারম্যান নির্বাচত হয়েছিলেন। এ নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। তিনি তার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বেশ জোরেশোরেই প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।
হাকিম খান জানান, তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু তাকে বঞ্চিত করে ছেলে আবুকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এটি অন্যায় হয়েছে। ইউনিয়নে তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। মানুষ তার পক্ষে রয়েছে। এ কারণে মনোনয়ন না পেয়ে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।
নির্বাচনী পরিবেশ মোটেই ভালো নয়। তার প্রচার মাইক নিয়ে বের হলেই নৌকার লোকজন ফিরিয়ে দিচ্ছে। প্রচারে বাধা দেওয়া হচ্ছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তিনি বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন বলে দাবি তার।
হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতি সৃষ্টির অভিযোগ করেছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সিদ্দিকুর রহমানও।
তিনি জানান, রাত ১২টার পর নৌকার লোকজন বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের ভয় দেখাচ্ছেন। এটি সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায়। বিষয়টি তিনি নির্বাচন কর্মকর্তাকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন।
নৌকার প্রার্থী আবু হাসান বলেন, বাবা যেসব অভিযোগ করেছেন তা সত্য নয়। বাবা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। চুপচাপ হয়ে গেছেন। মনোনয়নের আগে তাকে বলা হয়েছিল, আপনি আমাদের সঙ্গে কাজ করেন। তার পর আর তার সঙ্গে কথা হয়নি।
স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সিদ্দিকুর রহমানের অভিযোগ সম্পর্কে আবু হাসান বলেন, সিদ্দিকের লোকজনই এসব করে বেড়ায়। এ ছাড়া নির্বাচনী পরিবেশ সুষ্ঠু আছে।
যশাই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রভাষ চন্দ্র সেন জানান, নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণায় বাধার বিষয়ে কেউ তাকে অভিযোগ দেয়নি। প্রার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে প্রচার চালাতে পারেন সেদিকে খেয়াল রাখা হবে।
পাংশা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল আলিম জানান, যশাই ইউনিয়নের বিষয়ে তার কাছে কোনো অভিযোগ নেই।
মন্তব্য করুন