ঢাকা বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

২ হাজার টাকায় ২০ বিঘা জমি কিনেছেন নৌকার প্রার্থী এমপি মকবুল

২ হাজার টাকায় ২০ বিঘা জমি কিনেছেন নৌকার প্রার্থী এমপি মকবুল

সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন। ফাইল ছবি

এবিএম ফজলুর রহমান, পাবনা  

প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩ | ১৮:২৩ | আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩ | ২০:৫৪

অবিশ্বাস্য তবে সত্য পাবনা-৩ (চাটমোহর-ভাঙ্গুড়া-ফরিদপুর) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী মকবুল হোসেন ২০ বিঘা জমি কিনেছেন মাত্র দুই হাজার টাকায়। প্রতি বিঘা জমি কিনেছেন ১০০ টাকায়। নির্বাচনী হলফনামায় স্থাবর সম্পত্তির ঘরে এ তথ্য দিয়েছেন সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন।

জানা গেছে, হলফনামায় সম্পদের পরিমাণ দেখিয়েছেন ৩ কোটি ১৭ লাখ ৬৭ হাজার ৭১০ টাকা। এর মধ্যে আয় দেখানো হয়েছে ৩২ লাখ ৭ হাজার ৫১০ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে ২ কোটি ৭২ লাখ ৩৮ হাজার এবং স্থাবর সম্পত্তির মূল্য ধরা হয়েছে ১৩ লাখ ২২ হাজার ২০০ টাকা। স্ত্রীর নামে স্থাবর সম্পত্তি এক লাখ টাকা মূল্যের দশমিক ৯০ একর জমি, অকৃষি জমির মূল্য বাবদ ৫ লাখ ৫৩ হাজার ৬০০ টাকা ও ৫ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ টাকা বাড়ি দাম ধরেছেন। একই সঙ্গে স্ত্রীর নামে ১৫ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে।

হলফনামায় অস্থাবর সম্পত্তির ঘরে তিনবারের এ সংসদ সদস্য ও দুই বারের উপজেলা চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন উল্লেখ করেছেন, কৃষিখাত থেকে প্রতি বছর তাঁর আয় ১ লাখ ১৬ হাজার টাকা, প্রতি বছর বাড়ি ভাড়া থেকে আয় ৫ লাখ ৬১ হাজার ৫১০ টাকা, জমি ইজারা থেকে প্রতি বছর পান দেড় লাখ টাকা, সংসদ সদস্য হিসেবে সম্মানী পেয়েছেন ২৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা, ব্যাংকে নগদ ১ কোটি ৬৭ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ টাকা, স্ত্রীর নামে ২১ লাখ ১০ হাজার টাকা, ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র এবং নিজের প্রাইভেটকারসহ অন্য যানবাহনের মূল্য ধরেছেন ৭১ লাখ ৩২ হাজার ৫০০ টাকা। এ ছাড়া অন্যান্য সম্পদ আছে ২ লাখ ৩ হাজার টাকার।

তিনি হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি পাশ এবং পেশা হিসেবে জোতদার উল্লেখ করেছেন। তার নামে কোনো দেওয়ানি বা ফৌজদারি মামলা নেই। প্রতিশ্রুতির বিষয়ে তিনি উল্লেখ করেছেন, বিগত নির্বাচনে দলীয় সভানেত্রীর দেওয়া সকল প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছেন। 

দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি পাবনা জেলা শাখার সদস্য মো. আব্দুর রাজ্জাক সমকালকে বলেন, ১০০ টাকা বিঘা জমি এখন অবিশ্বাস্য ব্যাপার। তাই বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার। 

এ বিষয়ে এমপি মকবুল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সমকালকে বলেন, ‘আমি এই ২০ বিঘা জমি ১৯৭২ সালে কিনেছি। তখন ১০০ টাকা বিঘা ছিল। সেই সময় থেকে আয়কর ফাইলে এই জমির মূল্য যেভাবে ধরা হয়েছে আমি সেই ভাবেই তথ্য দিয়েছি।’

পাবনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহাঙ্গীর আলম সমকালকে বলেন, ‘এ বিষয়ে নির্বাচনী কর্মকর্তা ভালো বলতে পারবেন।’

এ বিষয়ে পাবনা জেলা সিনিয়র নির্বাচনী কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, আয়কর ফাইলে যেভাবে মূল্য ধরা আছে হয়তো সেভাবেই তিনি দিয়েছেন। বর্তমান মূল্য দেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি আরও বলেন, ‘এটি সম্পর্কে তেমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।’

পাবনা-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন চাটমোহর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ মাস্টার, মীর নাদিম মোহাম্মদ ডাবলু (জাতীয় পার্টি), মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরী (বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি-বিএসপি), বেলাল মোল্লা (ন্যাশনাল পিপলস পার্টি), খায়রুল আলম (গণতন্ত্রী পার্টি), কামরুজ্জামান মো. হাদী (জাকের পার্টি) ও আবুল বাশার শেখ (জাসদ)।

whatsapp follow image

আরও পড়ুন

×