তৎপরতার পরও ভোটার উপস্থিতি ছিল কম

.
খুলনা ব্যুরো
প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২৪ | ০০:১৯
নির্বাচনী প্রচার শুরুর পর থেকেই খুলনা-২ (সদর ও সোনাডাঙ্গা) আসনের কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। বিভিন্নভাবে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছিল দলীয় নেতাকর্মী, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, সরকারের সুবিধাভোগীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ভোটারদের। কিন্তু সর্বাত্মক প্রচেষ্টার পরও ভোটার উপস্থিতি ছিল ৩৫ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ, যা খুলনার অন্য পাঁচটি আসনের তুলনায় কম।
এ নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে অসন্তুষ্টি রয়ে গেছে। তারা মনে করেন, এ আসনে এত কম ভোটারের উপস্থিতি কাম্য ছিল না। দলের পক্ষ থেকে কম ভোটার উপস্থিতির কারণ বিশ্লেষণ করা হবে বলে জানিয়েছেন নেতারা।
এবারের নির্বাচনে খুলনার ৬টি আসনে গড় ভোট প্রদানের হার ৪৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। এর মধ্যে খুলনা-১ আসনে ৫৪ দশমিক ২২ শতাংশ, খুলনা-২ আসনে ৩৫ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ, খুলনা-৩ আসনে ৪৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ, খুলনা-৪ আসনে ৪৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ, খুলনা-৫ আসনে ৫৫ শতাংশ ও খুলনা-৬
আসনে ৪০ দশমিক ২২ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন। অথচ মাত্র ৬ মাস আগে গত ১২ জুন খুলনা-২ ও ৩ সংসদীয় এলাকা নিয়ে গঠিত খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৪৮ শতাংশ।
খুলনা-২ আসনে সাত প্রার্থীর মধ্যে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত শেখ সালাহ উদ্দিন জুয়েল। অন্য ৬ দুর্বল প্রার্থীই মোট প্রাপ্ত ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগেরও কম ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন।
মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানান, ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে ১৫৭টি ভোট কেন্দ্রভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। কাজে লাগানো হয় দলের কাউন্সিলরদেরও। নারী কর্মীরা আলাদাভাবে ভোটারদের বাড়ি গিয়ে নারীদের ভোটকেন্দ্রে যেতে উদ্বুদ্ধ করেন। গণসংযোগ, মাইকিং, পোস্টারিং ও অন্যান্য প্রচারণার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতেও প্রচারণা চালানো হয়। সরকারের বিভিন্ন ভাতা, ডিলারশিপ, টিসিবি কার্ডধারীসহ সরকারের সুবিধাভোগীদের ভোট দিতে যেতে উদ্বুদ্ধ করা হয়।
তাছাড়া দলের প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের নেতারা চিকিৎসক, শিক্ষকসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন, শ্রমিক ও মালিক সংগঠন, সিবিএ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সঙ্গে বৈঠকও করেন। এমনকি ভোটারদের জন্য ইজিবাইকের ব্যবস্থাও করা হয়। এর পরও ভোটার উপস্থিতি অন্য আসনের তুলনায় কম হয়েছে। এজন্য অসন্তুষ্ট নেতারা। কারণ ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ ভোটার উপস্থিতির লক্ষ্য নিয়ে প্রচার চালানো হয়।
এ ব্যাপারে এই আসনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম ডি এ বাবুল রানা বলেন, ভোটার উপস্থিতির হার নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট না। দলীয় সভা ডেকে এর কারণ বিশ্লেষণ করা হবে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন এবং এই নির্বাচনের প্রেক্ষাপট ভিন্ন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় নেতাকর্মীরা সহজ জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলেন। এ কারণে
ভোটার কেন্দ্রে আনার ব্যাপারে নেতাকর্মীর মধ্যে শিথিলতা ছিল।
নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য এস এম কামাল হোসেন বলেন, নির্বাচনের আগের রাতে বিএনপি-জামায়াতের লোকজন ব্যাপক বোমাবাজি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এ কারণে সাধারণ ভোটাররা অনেকে ভোট দিতে আসেননি।