১০ লাখ টাকা লুটে নিতে তিন বন্ধু মিলে দাদিকে হত্যা

ছবি: সংগৃহীত
নেত্রকোনা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২৪ | ২০:৪৯
নেত্রকোনার নিউটাউন বিলপাড় এলাকায় নিজ বাসার শয়নকক্ষ থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বৃদ্ধ জোছনা বেগমের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গত সোমবার রাতে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় মঙ্গলবার ভোরে বৃদ্ধার নাতিসহ তিন কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার কিশোরেরা হলো– জোছনা বেগমের নাতি, তার বন্ধু নেত্রকোনা পৌরসভার পূর্ব চকপাড়ার আবদুল হকের ছেলে ও সদর উপজেলার উলুয়াটি গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে। তাদের প্রত্যেকের বয়স ১৫ বছর।
এলাকাবাসী জানান, জোছনা বেগমের তিন ছেলের মধ্যে একজন বগুড়া ও একজন বরিশালে থাকেন। তিনি বড় ছেলে ফারুক হোসেন মিল্টনের সঙ্গে নেত্রকোনা শহরের নিউটাউন বিলপাড়ের বাসায় বসবাস করতেন। প্রায় ১০ দিন আগে মিল্টন বরিশাল যান কাজে। মিল্টনের স্ত্রীও চলে যান জেলার আটপাড়ায় বাবার বাড়িতে। এ কারণে কয়েক দিন ধরে বাসায় একা ছিলেন তিনি। গত সোমবার ছেলে মিল্টন বারবার ফোন করে মায়ের সঙ্গে কথা বলতে পারছিলেন না। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে জোছনা বেগমের ভাই ফেরদৌস দরজার তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় মেঝেতে বোনের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় ঘরের ভেতরে জিনিসপত্র এলোমেলো ও স্টিলের আলমারি খোলা ছিল। রাতেই জোছনা বেগমের ছোট ছেলে নাজমুল হাসান রুজেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় মামলা করেন। পরে তিন কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সুচ, গ্লাভস, ইনজেকশন জব্দ করেছে পুলিশ।
নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লুৎফর রহমান জানান, নিহত বৃদ্ধার নাতি নবম শ্রেণিতে পরীক্ষা না দেওয়ায় বাসা থেকে বের করে দেন তার মা-বাবা। এর পর থেকে বন্ধুদের সঙ্গে ও বিভিন্ন স্থানে থাকত সে। কয়েক দিন ধরে তার মা ও বোন আটপাড়ায় বেড়াতে যাওয়ায় বাসায় একা ছিলেন জোছনা বেগম। এ বিষয় এবং বাসার আলমারিতে ১০ লাখ টাকা আছে জানতে পারে বৃদ্ধার নাতি। এই টাকা নিয়ে যেতে তিন বন্ধু মিলে পরিকল্পনা করে স্থানীয় একটি হাসপাতাল থেকে চেতনানাশক ইনজেকশন সংগ্রহ করে গত রোববার রাত ৯টার দিকে বাসায় ঢোকে। পরে জোছনা বেগমের হাত-পা বেঁধে চেতনানাশক ইনজেকশন দিয়ে অচেতন করে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে তিন বন্ধু। এরপর আলমারি থেকে টাকা নেওয়ার চেষ্টা চালায় তারা। কিন্তু লকার ভাঙতে না পারায় আলমারিতে থাকা ২ হাজার টাকা নিয়ে কিছু সময় পর পালিয়ে যায়। পরে শহরের কোর্ট স্টেশন এলাকায় ইনজেকশন, সুচ ও হাতের গ্লাভস একটি পুকুরে ফেলে দেয়।