বেড়েছে শীতের কাপড়ের দাম, ভিড় নেই ফুটপাতে

.
শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২৪ | ২২:২৪
শৈলকুপা বাজারের ফুটপাতে শীতের পোশাক কিনতে এসেছিলেন কবিরপুর গ্রামের চাতাল শ্রমিক কতরি বেগম। তিনি প্রতিবছর শীতে রাস্তার পাশের ভ্রাম্যমাণ দোকান থেকে শীতের পোশাক কেনেন। আগে সেখান থেকে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় পোশাক কিনেছেন। তবে এবার ১০০ টাকার কমে কিছু পাননি। তিনি আক্ষেপ করে বলেছিলেন, এবার সবজি কিনতে গেলেই সব শেষ হয়ে যাচ্ছে। শীতের পোশাক কিনবেন কীভাবে?
দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো ঝিনাইদহের শৈলকুপাতেও জেঁকে বসেছে শীত। বরাবরের মতোই এ অঞ্চলের নিম্ন আয়ের মানুষের শীতের গরম পোশাকের জন্য ভরসা ফুটপাত। তবে এবার শীতের তীব্রতা বেশি থাকলেও এখনও জমে ওঠেনি ফুটপাতের দোকানের শীতের কাপড়ের বেচাকেনা। প্রতি হাটে অল্পসংখ্যক স্বল্প ও মধ্যম আয়ের মানুষ এসব দোকানে ভিড় করছেন। কিন্তু কিনছেন কম।
দোকান মালিকদের ভাষ্য, এবার শীতের কাপড়ের প্রতি বেলের দাম ২ থেকে ৩ হাজার টাকা বেড়েছে। অনেকে দাম শুনে চলে যাচ্ছেন। শীতের কাপড় কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের তথ্য অনুযায়ী, গরম কাপড়ের দাম আগের বছরের তুলনায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে
দ্বিগুণ বেড়েছে। এতে বেচাকেনা কমে গেছে সব ধরনের দোকানে।
শৈলকুপা বাজারের ফুটপাতে ভ্রাম্যমাণ দোকানে কাপড় বিক্রি করেন কুষ্টিয়ার পান্টি গ্রামের রাশেদ খান। তিনি বলেন, এবার শীতের কাপড়ের তেমন বেচাকেনা নেই। গতবারের তুলনায় দাম একটু বেশি। গত মৌসুমে শীতের কাপড়ের যে বেল তারা ৬ থেকে ৭ হাজারে কিনেছেন, এবার তা ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা।
একই ধরনের কথা বলেন শৈলকুপার দোহারো গ্রামের মুক্তার হোসেন। তাঁর কথায়, এবার বাজারে শীতের কাপড় বেচাকেনা কম। যে কাপড় তাঁর প্রতিটি ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেনা পড়েছে, ক্রেতা সেগুলো ৫০ থেকে ৬০ টাকা দাম বলে চলে যাচ্ছেন। আরেক ব্যবসায়ী মোকাদ্দেস হোসেন বলেন, ফুটপাতে আগে তারা হাঁকডাক দিয়ে সবাই প্রতিযোগিতা করে কাপড় বিক্রি করেছেন। এবার সেটা দেখা যাচ্ছে না। বেচাকেনা হলে মনে আনন্দ থাকে। মানুষের সঙ্গে কথা বলতে ভালো লাগে।
প্রতিবছর ফুটপাত থেকে পরিবারের সদস্যদের জন্য শীতের গরম কাপড় কেনেন কবিরপুর হাসপাতাল গেটের সেলুন কর্মী উজ্জ্বল কুমার বিশ্বাস। তবে এবার দাম বেশি হওয়ায় কিনতে হিমশিম খেতে হয়েছে তাঁকে। উজ্জ্বল কুমারের ভাষ্য, সারাদিন কাজ শেষে সবজি কিনতে গেলে অন্য কিছু কেনার আর চিন্তা করা যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে শৈলকুপা সরকারি ডিগ্রি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবিদ আসাদ বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নিম্ন আয়ের মানুষের খাবার জোটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। হয়তো এ কারণে পুরোনো কাপড় দিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন তারা।