সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার অন্যতম আসামি টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের রাষ্ট্রীয় পদক ও খেতাব প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছেন এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফরিদুল আলম। 

আলোচিত এই হত্যা মামলার যুক্তি-তর্কে অংশ নিয়ে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম আদালতে বলেন, ওসি প্রদীপ হত্যা মামলার আলোচিত একজন আসামি। আদালতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়েছে। সুতরাং হত্যা মামলার একজন আসামির বাংলাদেশ পুলিশ পদক বিপিএম এবং প্রেসিডেন্ট পুলিশ পদক পিপিএম এর সম্মান বহাল রাখা কোনোভাবে যুক্তিযুক্ত নয়। ওসি প্রদীপের এই সম্মান প্রত্যাহারের জন্য তিনি আদালতের কাছে আবেদন জানান। তবে আদালত এই বিষয়ে রোববার কোনো সিদ্ধান্ত দেননি। 

রোববার সকাল সোয়া ১০টার দিকে কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈলের আদালতে সিনহা হত্যা মামলার যুক্তি-তর্ক শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষে যুক্তিতর্কে অংশগ্রহণ করেন পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম, বাদী পক্ষের অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, মো. মোস্তফা ও রেজাউর রহমান। অন্যদিকে আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট শামশুল হুদা ও জাকারিয়া।

গতকাল আদালতের কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগেই অভিযুক্ত টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ সহ কারান্তরীণ সব আসামিকে আদালতে তোলা হয়। এর আগে গত ১ ডিসেম্বর আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থন করে সাফাই সাক্ষ্য শেষে যুক্তি-তর্ক উপস্থাপনের জন্য ৯ থেকে ১২ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছিলেন আদালত।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফরিদুল আলম জানান, সিনহা হত্যার মামলার বিচারিক কার্যক্রমের শেষ পর্যায়ে যুক্তি-তর্ক শুরু হলে রাষ্ট্রপক্ষ এবং আসামি পক্ষ এতে অংশ নেয়। আরও দুই দিন এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। গত বছরের ২৩ আগস্ট থেকে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈলের আদালতে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা শুরু হয়। তা শেষ হয় গত ১ ডিসেম্বর। এতে মামলার মোট ৮৩ জন সাক্ষীর মধ্যে তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ৬৫ জন সাক্ষ্য প্রদান করেছেন। সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষে রবিবার যুক্তি-তর্ক শুরু হলো।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।