- সারাদেশ
- আন্দোলনের মুখে সিসিকের পানির বিল পুনরায় নির্ধারণ
আন্দোলনের মুখে সিসিকের পানির বিল পুনরায় নির্ধারণ

নগরবাসীর আন্দোলনের মুখে বর্ধিত পানির বিল পুনরায় নির্ধারণ করেছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। বুধবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে পানির বিল পুনঃনির্ধারণের কথা জানিয়েছেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
তিনি বলেন, নাগরিকদের দাবি ও সুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে পানির বিল পুনরায় নির্ধারণ করা হয়েছে। এবারে পানির সরবরাহ পাইপের বিভিন্ন সাইজ অনুযায়ী ২০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিল বাড়ানোর কথা জানিয়েছে তিনি।
মেয়র আরিফ বলেন, যারা অবৈধভাবে পানির সংযোগ নিয়েছেন, তারা আগামী ৩০ জানুয়ারির মধ্যে প্রয়োজনীয় অনুমোদন করিয়ে নিতে পারবেন। অন্যথায় সিসিকের অভিযানে অবৈধ সব সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে হঠাৎ সরবরাহ পাইপের বিভিন্ন সাইজ অনুযায়ী পানির বিল দ্বিগুণ হারে বর্ধিত করে সিসিক। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে নগরীর বিভিন্ন জায়গায় মানববন্ধন-সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। এসব কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও সংহতি জানিয়ে অংশ নেন। সিসিকের বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলররাও নগরবাসীর দাবির প্রতি একাত্মতা পোষণ করে রাস্তায় নামেন। বর্ধিত বিল প্রত্যাহার না করলেও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়। এ পরিস্থিতিতে সিসিক মেয়র আরিফ বর্ধিত পানির বিল পুনঃর্বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছিলেন।
পুনঃনির্ধারিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আবাসিক গ্রাহকদের হাফ ইঞ্চি সাইজের সরবরাহ লাইনের ক্ষেত্রে মাসিক ৩০০ টাকা করে পানির বিল দিতে হবে। এতদিন হাফ ইঞ্চি পাইপের ক্ষেত্রে মাসে ২০০ করে বিল দিতেন গ্রাহক; যা মাঝে ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সবচেয়ে ছোট সাইজের পাইপের ক্ষেত্রে ১০০ টাকা করে বিল বাড়িয়েছে সিসিক। এছাড়া আবাসিক গ্রাহকদের এখন থেকে পৌনে এক ইঞ্চি লাইনের ক্ষেত্রে ৬০০ টাকা ও এক ইঞ্চি লাইনের ক্ষেত্রে ১২০০ টাকা বিল দিতে হবে। চার মাস আগে এই দুই শ্রেণির গ্রাহকদের বিল যথাক্রমে ৪০০ টাকা থেকে বেড়ে করে ৮০০ টাকা এবং এক হাজার টাকা থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা করেছিল সিসিক।
এদিকে তিন সাইজের পাইপের বাণিজ্যিক সংযোগের গ্রাহকদের যথাক্রমে ৭০০, এক হাজার ১০০ ও দুই হাজার টাকা পানির বিল নির্ধারণ করা হয়েছে। বাণিজ্যিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে মাঝে সরবরাহ লাইনের পাইপের সাইজ অনুযায়ী ৪০০, ৭০০ ও এক হাজার ৫০০ টাকা বিল বাড়িয়ে যথাক্রমে ৮০০, এক হাজার ২০০ ও দুই হাজার ২০০ করা হয়েছিল। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে সর্বশেষ পাইপের সাইজ অনুযায়ী, যথাক্রমে ৭০০, এক হাজার ১০০ ও দুই হাজার ৫০০ টাকা বিল নির্ধারিত হয়েছে। বাণিজ্যিক গ্রাহকদের যথাক্রমে আগের বিল ৪০০, ৭০০ ও দুই হাজার থেকে যথাক্রমে ৮০০, এক হাজার ২০০ ও তিন হাজার টাকা করা হয়েছিল।
নিজস্ব আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে সিসিক সরকারি গ্রাহকদেরও সরবরাহ লাইনের সাইজ অনুযায়ী পানির বিল বৃদ্ধি করেছিল। সেটিও কমিয়েছে সিসিক। এ ধরনের গ্রাহকদের হাফ ইঞ্চি পাইপের ক্ষেত্রে ৭০০, পৌনে এক ইঞ্চি পাইপের ক্ষেত্রে এক হাজার ১০০ এবং এক ইঞ্চি পাইপের ক্ষেত্রে এক হাজার ২০০ টাকা বিল নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোপূর্বে তিন সাইজের পাইপের ক্ষেত্রে ৪০০, ৭০০ ও এক হাজার বিল বৃদ্ধি করে যথাক্রমে ৮০০, এক হাজার ২০০ ও এক হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করেছিল সিসিক।
এছাড়া বুধবার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বাসার পাশাপাশি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের পানির বিল মওকুফের কথা জানিয়েছেন মেয়র আরিফ।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর আজম খান, আজাদুর রহমান আজাদ, সালেহ আহমদ সেলিম, আফতাব হোসেন খান, আব্দুল মুহিত জাবেদ, এসএম শওকত আমীন তৌহিদ, শাহানা বেগম শানু প্রমুখ।
মন্তব্য করুন