- সারাদেশ
- ভাতিজা-ভাগিনা ২৭টি মামলা দিয়ে শিক্ষককে হয়রানির অভিযোগ
ভাতিজা-ভাগিনা ২৭টি মামলা দিয়ে শিক্ষককে হয়রানির অভিযোগ

সংবাদ সম্মেলনের একটি চিত্র।
ভাতিজা, ভাতিজি ও ভাগিনার দায়েরকৃত ২৭ মামলার খড়্গ, মারধর এবং তাদের নানাবিধ হয়রানি থেকে বাঁচার আকুতি জানিয়েছেন পটুয়াখালী সদর উপজেলার ইটবাড়িয়া ইউ সি কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক গোলাম মোস্তফা।
শনিবার দুপুর ১২টার দিকে পটুয়াখালী প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আকুতি জানান। এ সময় তার স্ত্রী মোসা. জাহানুর বেগম ও ছোট মেয়ে নুসরাত জাহান উপস্থিত ছিলেন। তবে তার বিরুদ্ধেও ১২টি মামলার অভিযোগ করেছেন প্রতিপক্ষরা।
সংবাদ সম্মেলনে গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আমার কোনো ছেলে সন্তান নেই, শুধু পাঁচটি মেয়ে রয়েছে। তাদেরকে সর্বোচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করছি। আমার মেয়েরা বাংলাদেশ সচিবালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় চাকরি করছে। তবে ছোট মেয়ে এখনও পড়াশোনা করে। এ সুযোগে আমার দূর সম্পর্কের ভাতিজা কামরুল হাসান কামির, ভাতিজি মাহফুজা আক্তার ও ভাগিনা বদরুল ইসলামসহ কয়েকজন আত্মীয়-স্বজন জোট করে সহায়-সম্পত্তি দখলের জন্য আমার বিরুদ্ধে ২৭ টি মামলা দিয়ে নানাভাবে হয়রানি করছেন। এমনকি হত্যা করার উদ্দেশ্যে আমার ওপর হামলাও করেছে তারা। একজন শিক্ষক হিসেবে আমি সরকারের কাছে জীবনের নিরাপত্তা চাই এবং নিরাপদে জীবন যাপনের অধিকার চাই।
এই ব্যাপারে ভাতিজা কামরুল হাসান কামির বলেন, ‘গোলাম মোস্তফার সকল অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। বরং ওই গোলাম মোস্তাফার এক মেয়ে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে চাকরি করেন। এ কারণে আমার বাবার নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় না ওঠায় তার মেয়েকে দিয়ে নাম ওঠানোর চেষ্টা করি। এ জন্য তিনি (গোলাম মোস্তফা) পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। আমরা রাজি হয়ে ২০২০ সালে তাকে দুই লাখ টাকা অগ্রিম দিই। কিন্তু অদ্যাবধি আমার বাবার নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় ওঠেনি এবং টাকাও আর ফেরত দেননি তিনি। ওই দুই লাখ টাকা না দেওয়ার জন্য এসব মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করে আমাদেরকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করছেন তিনি।
তিনি উল্টো অভিযোগ করেন, গোলাম মোস্তফা আমাদের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ১২টি মামলা দায়ের করেছেন এবং প্রায়ই মেয়েকে দিয়ে থানায় ফোন দিয়ে পুলিশ দিয়ে আমাদের হয়রানি করছেন। তার মেয়েদের দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে ইভটিজিং মামলা দেওয়ারও ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন তিনি। আমরা তার এই অত্যাচার ও হয়রানি থেকে মুক্তি চাই।
অপর অভিযুক্ত মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি ঢাকাতে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছি। গত পাঁচ বছর ধরে বাড়িই যাইনি। তারপরও আমার এই সৎ চাচা (গোলাম মোস্তফা) আমার বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা দেয়। আসলে উনি নিজেই একজন মামলাবাজ। আমার এই চাচার অত্যাচারে ও মামলায় আমার মা রিজিয়া বেগম, ফুফু মাহফুজা বেগম, তার শাশুড়ি কুলসুম বেগম, চাচা মো. মফিজুর রহমানসহ সকল আত্মীয়-স্বজনরা অতিষ্ঠ। শহরের বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিরা একাধিকবার সালিশ বৈঠক করে বিষয়টির সীমাংসার উদ্যোগ নেয়। কিন্তু আমার এই চাচা কোনো সালিশই মানতে চান না। উনি নিজেই এই সমস্যা জিইয়ে রেখেছেন।
উল্লেখ্য, গোলাম মোস্তফা স্বীকার করেছেন তিনি নিজেও সাতটি মামলা করেছেন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। তবে তিনি যে ভাতিজা-ভাতিজি-ভাগিনার বিরুদ্ধে তার নামে ২৭টি মামলা করার অভিযোগ করেছেন সেই ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। যাদের বিরুদ্ধে মামলা করার অভিযোগ করা হয়েছে তারা জানিয়েছেন, মামলা হয়েছে, তবে সংখ্যায় তা ২৭ হবে না।
মন্তব্য করুন